২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ভারতকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। দশ ট্রাক অস্ত্র আটক, ভারতের সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটে বিএনপি ও জোট সরকারের আমলে। তবে এসবের পরও ভারতের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই বলে জানান বিএনপি নেতারা।
২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফরে আসেন। এ সময় বিএনপির হরতাল কর্মসূচি চলছিল। প্রণব মুখার্জির সফরের সময়ও হরতাল চালু রাখে বিএনপি। তার সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকে খালেদা জিয়া যোগ না দেয়াসহ নানা কারণে বিএনপিকে ভারত আস্থায় না নেয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।
সম্প্রতি অতীতের বিরোধিতা ভুলে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঝালাই করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিএনপি। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতেও আগ্রহী দলটি। দলের নেতারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। আগামী নির্বাচনে দেশটিকে পাশে চায় তারা। বিএনপি নেতাদের আশা, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের চাওয়ার বাইরে যাবে না ভারত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিএনপির সঙ্গে ভারতের কোনো দ্বন্দ্ব বা বিরোধ নেই। যেটা বাইরে প্রচার করা হয়, সেটা আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটের জন্য করে থাকে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ভারতের নিজের স্টেটমেন্টে বলে যে, তারাও চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
এদিকে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে তৎপর পশ্চিমা দেশগুলোও। ক্ষমতাধর দেশগুলোর নানামুখী তোড়জোড়ের মধ্যেও দৃশ্যত নীরব ভারত। সে সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। অতীতের তিক্ততা ভুলে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় দলটি। দূর করতে চায় দেশটির সঙ্গে আস্থাহীনতা।
এমন উদ্যোগ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও নিয়েছিল দলটি। কিন্তু নির্বাচনের পরপরই নেতারা ভারতবিরোধী বক্তব্য দিতে থাকেন। এবার আরেকটি নির্বাচন সামনে রেখে অতীতে ভারতবিরোধিতাকে পুঁজি করা বিএনপি বলছে, ভারতের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের জন্যই দেশের স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন। সে কারণে অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের চাওয়ার বাইরে যাবে না ভারত।
আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, গণতান্ত্রিক দেশগুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলাদেশে কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ভারত কী করলে বাংলাদেশের মানুষ স্বাভাবিকভাবে যে ভারতের বন্ধু হওয়ার কথা সেটিকে তারা ফিরিয়ে আনতে পারে। এটি ভারতের দায়িত্ব।
ভারত বিএনপির প্রতি পূর্ণ সমর্থন না জানালেও সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে যেন অবস্থান না নেয়, এমন ন্যূনতম সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান বলেও জানান বিএনপি নেতারা।