পলাতক আসামির তত্ত্বাবধায়নে বিএনপি বড় বড় কথা বলে আর পাচারের টাকায় আন্দোলন করে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) শোকাবহ আগস্ট ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
‘বিএনপি বলে, আমরা নাকি পালাবার পথ পাবো না। তাদের বলি, আওয়ামী লীগ কোনোদিন পালায় না। মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছিলো তারেক জিয়া। আর তখন আমি বিদেশ থেকে জোর করে বাংলাদেশে ফিরে আসে। বিমানবন্দরে গুলির কথার বলা হয়েছিলো, বলেছিল এমন জায়গা নিয়ে যাবে যাতে খোজ পাওয়া যাবে না।’
বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তোরা তো পালিয়েই আছিস! পলাতক আসামির তত্ত্বাবধায়নে এতো বড় কথা আসে কিভাবে?
আওয়ামী লীগ প্রতিশোধে বিশ্বাসী না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে নির্যাতন করা হয়েছে, তার একভাগ প্রতিশোধ নিলেও ওদের হদিস পাওয়া যেতো না। সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের কারণে ওরা প্রত্যাখ্যাত।
বিএনপির আন্দোলনের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বিএনপির আন্দোলনের জন্য কোথা থেকে এতো টাকা পাচ্ছে? এসব পাচারের টাকা।
১৫ আগস্টকে জাতির কলঙ্কময় অধ্যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিদেল কাস্ট্রো, ইন্দিরা গান্ধী, মার্শাল টিটোসহ অনেকে নেতাই বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাতে সাড়া না দিয়ে বলেছিলেন, ওরা তো আমার ছেলের মত।
‘শুধু হত্যা নয়, ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিলো। ৭ মার্চের ভাষণ, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিলো। সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করা হয়েছিলো। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা হয়, মন্ত্রী বানানো হয়। জিয়ার এই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরশাদ এবং খালেদা জিয়া।’
বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আমাদের বিচার চাওয়ার, মামলা করার অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়। বরং খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়। জিয়া আমাদের দেশে আসতে বাধা দেয়। রেহানার পাসপোর্টও নবায়ন করতে দেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফিরলে ৩২ নাম্বার বাড়িতে ঢুকতে দেননি জিয়া। বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারবার বাধা এসেছে যাতে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে না পারে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের প্রভুরা এখনো সে চক্রান্তে লিপ্ত। কিন্তু জনগণই আমাদের মূল শক্তি। বাংলার মানুষই আমার আপনজন।
‘অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে কেবল ক্ষমতায় আসা নয়, আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে বাংলার মানুষের উন্নতি করতে। আমরা সব সময় মানুষের পাশে থাকি, মানুষের পাশে থাকাটাই আমাদের দায়িত্ব ও লক্ষ্য।’
স্বাধীনতার পর এই প্রথম দেশে স্থিতিশীলতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
যেহেতু সরকারের ধারাবাহিকতা আছে, সেহেতু বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছ। সাইফুর রহমান বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। তাহলে বিদেশি সহায়তা পাওয়া যায় না। বিএনপির অনেক নেতার বাইরে থেকে বীজ আনার ব্যবসা ছিলো। যখন কৃষককে হত্যা করেছিলো খালেদা জিয়া, আমরা মাঠে নেমেছিলাম।
বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলার মানুষের যতটুকু উন্নতি হয়েছে, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে।
বক্তব্যে ডেঙ্গু সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হবার এবং মশক নিধনে নেতাকর্মীদের ভূমিকা রাখার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।