ফেইক লেভেল চক্রের দৌরাত্ম্যে মধ্যপ্রাচ্যে দেশের তৈরি পোশাক রফতানির বাজার এখন ঝুঁকির মুখে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এছাড়াও টাকা পাচারের লক্ষ্যে চক্রটি পণ্যের আন্ডার ইনভয়েসিং করছে বলে অভিযোগ করেছে।
জানা যায়, তৈরি পোশাক খাতের জন্য একেবারেই নতুন বাজার হিসেবে গেলো অর্থবছরে (২০২২-’২৩) মধ্যপ্রাচ্যে পণ্য রফতানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। এ সময় দেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা আরব আমিরাতে ২৯২ মিলিয়ন, সৌদি আরবে ১৮৫ মিলিয়ন, কুয়েতে ২৬ মিলিয়ন, কাতারে ৪ মিলিয়ন এবং ওমানে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছেন।
কিন্তু এসব দেশের বাজার ধরতে গিয়ে একটি চক্র জালিয়াতির আশ্রয় নিচ্ছে। আর এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে পোশাক রফতানির এ নতুন বাজার।
বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘যারা এ সংগঠনের সদস্য নন, তারাই এ কাজগুলো করছেন। লোকাল মার্কেট থেকে পোশাক কিনে বিভিন্ন ব্যান্ডের ফেইক লেভেল লাগিয়ে চালিয়ে দিচ্ছেন। বেশি লাভের আশায় একটি চক্র এমন ভয়ংকর কাজ করছে। এতে করে আমাদের বাজার নষ্ট হচ্ছে।’
জানা যায়, চক্রটি এর পাশাপাশি আন্ডার ইনভয়েসিং করে শুল্ক ফাঁকিও দিচ্ছে। সম্প্রতি এমন ২০টি প্রতিষ্ঠান আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অন্তত দেড়শ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। এর মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। এজন্য অবশ্য কাস্টমসের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা।
বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য দেখে কাস্টমস জব্দ করতে পারে চালান। এটি চাইলেই সম্ভব। এমন ধরনের চক্রকে খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়; কিন্তু কেন তা হচ্ছে না, সেটিই প্রশ্নের বিষয়।’
কাস্টমসের অনুসন্ধানেও বের হয়ে এসেছে চক্রটির জালিয়াতি। এ অবস্থায় দোষী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘ বিষয়টি নিয়ে আমরা এখন বেশ সর্তক অবস্থানে রয়েছি। আমাদের সকল কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের জালিয়াতি চোখে পড়লেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ইউরোপ-আমেরিকার প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশকটি দেশে নতুন বাজার হিসাবে পণ্য রফতানি করছে বাংলাদেশ, যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক বছরে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।