Homeসর্বশেষ সংবাদরেকর্ড ভঙ্গকারী সীমাহীন ঘুষখোর বীরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি

রেকর্ড ভঙ্গকারী সীমাহীন ঘুষখোর বীরগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি

প্রদীপ রায় জিতু, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি।।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি’র নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে দলিল লেখক ও জমি ক্রেতারা। বীরগঞ্জ উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে অফিসার হিসেবে গত ৪ জুন’২০২৩ ইং তারিখে অতিরিক্ত দায়িত্ব পান খানসামা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর দলিল লেখক সমিতির স্বঘোষিত সভাপতি পদ্মনাথ রায় যোগসাজসে সাড়ে ৯ শত টাকার স্থলে প্রতিটি দলিলে ১ হাজার ৫ শত টাকা ঘুষ দাবী করেন।

দাবীকৃত ঘুষের টাকা কম হলে দলিল রেজিষ্ট্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন দলিল লেখকদের। ফলে সিনিয়র দলিল লেখক মোঃ রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে সিংহভাগ দলিল লেখকগন কঠোর আন্দোলন শুরু করেনআন্দোলন করতে থাকায় ঐদিন শতাধিক জমির ক্রেতা-বিক্রেতাগন দিশেহারা হয়ে পড়েন।অনাকাংখিত প্রকাশ্য হাজারো জনতার সামনে অতিরিক্ত ঘুষের টাকা নিয়ে দর কষাকষিতে চরম হট্টগোল শুরু হয়।এক পর্যায় দলিল লেখক ও ক্রেতারা সাংবাদিকদের সরনাপন্ন হয়।সাংবাদিকরা সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি’র মুখোমুখি হলে তিনি বলেন আপনাদের কারনে কেবলমাত্র ৫জুলাই’২০২৩ ইং আজ বুধবারের দলিলগুলো পূর্বের নির্ধারিত সাড়ে ৯ শত টাকায় করব।কিন্তু পরবর্তী কার্য দিবস হতে আমার নির্ধারন করা দরে কাজ করতে হবে অর্থাৎ ১ হাজার ৫ শত টাকা হারে প্রতিটি দলিলে দিতে হবে।

সংগত কারনে দলিল লেখকরা জমি ক্রেতাদের নিকট থেকে বেশি টাকা আদায় করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান তারা।এ ব্যাপারে চলতি দায়িত্বে কর্মরত সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলিল লেখকরা প্রতি দলিলে গ্রহিতার কাছে পাঁচ থেকে দশ হাজার কিংবা তারও বেশী টাকা আদায় করে, তাতে কোন দোষ হয় না।আমি পনেরো শত টাকা নিলে দোষ?এসব ঘুষ আদায়ের টাকা আমি একাই নেই, এমনটা নয়। টাকার ভাগ জেলা রেজিস্ট্রার থেকে শুরু করে সকল উর্ধতন কর্মকর্তাকে দিতে হয়।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন সারা দেশে দলিল রেজিষ্ট্রি করতে টাকা লাগে, বীরগঞ্জে তো কমই নেওয়া হচ্ছে । কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে জানাতে বলেন, আমার সময় নেই, ব্যস্ত আছি।অপর এক সুত্র মতে জানা যায়, ঐদিন ও তারিখে একই দাগের ২৩ শতাংশ জমির একটি দলিল করা হয়েছে, যার প্রকৃত মুল্য ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু দলিলে লেখা হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। জমি ক্রেতার নিকট দলিল লেখক মোঃ রেজাউল করিম নিয়েছেন ৫৭ হাজার টাকা। এমন ঘটনায় এক দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জমির ক্রেতা, রেজিষ্ট্রি দলিলে প্রকৃত মুল্য কমিয়ে লেখার ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

বর্তমান ঘুষের টাকা আদায়ের দায়িত্ব পালন করছেন তথাকথিত সভাপতি দলিল লেখক প্দ্মূনাথ, আবুল কালাম আজাদ ও হাফিজুর রহমান হাফিজ দলিল লেখক ও ভেন্ডার।সংঘবদ্ধ আদায়কারী চক্রের সদস্যরা টাকা আদায় অন্তে রাতের বেলা এস.আর কর্তৃক মনোনিত অফিস সহকারী আব্দুল মালেক কে নির্ধারিত হারে মোটা অংকের ঘুষের টাকা বুঝে দিলে তিনি বিশ্বস্ততার সাথে অতি গোপনে সাবরেজিস্ট্রারের হাতে পৌছে দেন বলেও দলিল লেখকগন জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে হয়রানীর শিকার জমি ক্রেতাসহ ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনাসহ দুর্নীতিবাজ, চরম ঘুষখোর, সাব-রেজিস্ট্রার বার্নাড মার্ডি’র বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তির জোর দাবি জানানো হয়েছে।অন্যথায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গকারী সীমাহীন ঘুষখোর এই কর্মকর্তা এবং তার সহযোগীদের বীরগঞ্জের সচেতন মানুষ সমীচীন শিক্ষা দিতে বাধ্য হবে।

Exit mobile version