আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭ জন সেনাসদস্য এবং বাকিরা সবাই গ্রামবাসী। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বুধবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার জামফারা প্রদেশে সশস্ত্র গোষ্ঠীর চালানো হামলায় ৭ সেনাসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় একটি অধিকার গোষ্ঠীর প্রধান ইসমাইল মাগাজি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে প্রদেশটির মারু এলাকার প্রত্যন্ত দান গুলবি জেলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
লাওয়ালি জোনাই নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘এই হামলায় ২৭ জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন এবং ৭ জন সামরিক সদস্যও হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। মূলত বন্দুকধারীদের ভয়ঙ্কর এই হামলা থেকে গ্রামবাসীকে সাহায্য করার জন্য আসার পথে ওই সেনা সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।’
ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এই অপরাধী গোষ্ঠীটি স্থানীয়ভাবে ডাকাত হিসেবে পরিচিত। গত তিন বছর ধরে এই অপরাধীরা নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। এসময় তারা হাজার হাজার মানুষকে অপহরণ এবং শত শত মানুষকে হত্যা করেছে।
সাধারণত মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে এসব ডাকাতদল আসে; হামলাস্থলে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, লুটপাট করে এবং মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে। ডাকাতদের এই রক্তক্ষয়ী হামলার কারণে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় রাস্তায় চলাচল বা খামারে ভ্রমণ করা অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ বছর ধরে নাইজেরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।