ভারি বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যার কারণে চলতি বছর ভারতের হিমালয় অঞ্চলে প্রায় ১২২ মিলিয়ন ডলারের আপেল নষ্ট হয়েছে। এতে দেশটির আপেল উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষক ইউনিয়ন ও কর্মকর্তারা।
সোমবার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, চলতি বছর ভারি বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় ভারতের হিমালয় অঞ্চলে প্রায় ১২২ মিলিয়ন ডলারের আপেল নষ্ট হয়েছে।
মূলত পার্বত্য কাশ্মীর অঞ্চল এবং হিমাচল প্রদেশে ভারতের বেশির ভাগ আপেল উৎপাদিত হয় এবং উৎপাদিত আপেলের ২ শতাংশেরও কম বাংলাদেশ ও নেপালে রফতানি হয়।
তবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে হিমাচলের কেবল ফসলের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের রাস্তা, বিদ্যুৎ লাইন এবং অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সময়ে বৈরী আবহাওয়া ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ফসল ধান উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে গত সপ্তাহে চাল রফতানি নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
স্থানীয় কৃষক ইউনিয়নগুলো জানায়, ছত্রাকের আক্রমণের পর আপেলসহ অন্যান্য ফল খেতে পচে গেছে।
কৃষক ইউনিয়ন সংযুক্ত কিষান মঞ্চের রাজ্য আহ্বায়ক হরিশ চৌহান বলেন, হিমাচল প্রদেশের প্রায় ১০ শতাংশ আপেলবাগান বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। যেখানে একটি গাছে ফল আসতে প্রায় ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এবারের দুর্যোগে কৃষকদের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।
অ্যাপল গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া এবং কাশ্মীর ভ্যালি ফ্রুট গ্রোয়ার্স অনুমান করেছে, কাশ্মীরে এ বছর উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম হবে। যেখানে গত বছরের উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
আপেল গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবিন্দর চৌহান বলেন, এবারের ফসলের ক্ষতির মূল কারণ তুলনামূলক কম তুষারপাত এবং ভারি বর্ষণ।
আবহাওয়াবিদদের তথ্যমতে, কাশ্মীরে চলতি বছরের ১ জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষায় বৃষ্টিপাত হয়েছে গড়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদনকারী হিমাচল রাজ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
কাশ্মীরের হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্ট মনে করছে, বৈরী আবহাওয়ায় ফল ও শস্যের মোট ক্ষতির পরিমাণ ১০৯ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া হিমাচল প্রদেশে এবার গতবারের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম আপেল উৎপাদন হবে। যেখানে গত বছর ফলন ছিল ৬৪ হাজার মেট্রিক টন।