ব্যক্তির লিঙ্গ পরিবর্তন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাশিয়ায়। সোমবার (২৪ জুলাই) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাপ্তরিকভাবে ও চিকিৎসার মাধ্যমে শারীরিক পরিবর্তন ঘটিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তন নিষিদ্ধ করার আইনে স্বাক্ষর করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নতুন এই আইনের বিলটি আগে রাশিয়ার পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই পাশ হয়। পরে দেশের প্রেসিডেন্ট বিলটিতে সই করার পর তা আইনে পরিণত হয়।
নতুন আইন, অনুসারে লিঙ্গ পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং সরকারি নথিপত্র ও পাবলিক রেকর্ডে লিঙ্গ পরিবর্তন নিষিদ্ধ। কেবল জন্মগত ত্রুটি সারানোর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই আইন শিথিলযোগ্য।
এই আইনে কোনো বিবাহিত কোনো দম্পতির একজন লিঙ্গ পরিবর্তন করলে বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে। রূপান্তরিত লিঙ্গের ব্যক্তিরা পালক বা দত্তক পিতা-মাতা হতে পারবেন না।
‘ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ’ রক্ষায় ক্রেমলিনের ‘ধর্মযুদ্ধ’ থেকে এই নিষেধাজ্ঞার সূত্রপাত বলে ধারণা। রাশিয়া বলছে, ‘পশ্চিমের পরিবারবিরোধী আদর্শ’ থেকে রাশিয়াকে রক্ষা করবে এই আইন। রুশ আইনপ্রণেতাদের কেউ কেউ লিঙ্গ রূপান্তরকে ‘বিশুদ্ধ শয়তানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রায় এক দশক আগে রাশিয়ায় এলজিবিটিকিউ+ (প্লাস) সম্প্রদায়ের ওপর কড়াকড়ির সূত্রপাত হয়। তখন রুশ অর্থোডক্স চার্চের নীতি অনুসরণ করে ‘ঐতিহ্যগত পারিবারিক মূল্যবোধ’ রক্ষার ওপর জোর ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
২০১৩ সালে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সব ধরনের ‘অপ্রচলিত যৌন সম্পর্কের’ প্রকাশ্য সমর্থন নিষিদ্ধ করে ক্রেমলিন নতুন আইন চালু করে। এরপর ২০২০ সালে সমলিঙ্গের বিয়ে নিষিদ্ধ করতে সাংবিধানিক সংশোধনের উদ্যোগ নেন পুতিন এবং গত বছর তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ‘অপ্রচলিত যৌন সম্পর্কের প্রচার’ নিষিদ্ধের আইন করেন।
নতুন এই আইন রাশিয়ার সমকামী, ট্রান্সজেন্ডারসহ এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের ওপর বড় ধরনের আঘাত বলে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।