জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কিয়েভ-মস্কোর মধ্যে হওয়া শস্যচুক্তি থেকে সম্প্রতি সরে এসেছে রাশিয়া। এ ঘটনার পর শস্য রফতানি অব্যাহত রাখতে অস্থায়ী শিপিং রুট স্থাপনের কথা জানায় ইউক্রেন। তবে কিয়েভের এমন সিদ্ধান্তের পর এবার কৃষ্ণসাগরে প্রবেশ করা জাহাজে হামলার ইঙ্গিত দিয়েছে মস্কো। খবর আল-জাজিরা’র।
বুধবার (১৯ জুলাই) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে কৃষ্ণসাগরে কোনো জাহাজ প্রবেশ করলে সেটির ওপর হামলা চালানো হবে। চলমান যুদ্ধের অংশ হিসেবে এসব জাহাজকে বিবেচনা করা হবে ‘সামরিক লক্ষ্য’ হিসেবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কৃষ্ণসাগরে যেসব দেশের পতাকাবাহী জাহাজ পাওয়া যাবে, সেসব দেশকে ইউক্রেনের পক্ষে ও যুদ্ধে জড়িত হিসেবে ধরা হবে।’
কৃষ্ণসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমার উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণপূর্বের কয়েকটি এলাকাকে জাহাজ চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে দেয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার মধ্যরাত থেকে কৃষ্ণসাগরে প্রবেশ করা জাহাজ নিয়ে নিজেদের নতুন অবস্থান বাস্তবায়ন করবে মস্কো।
এদিকে শস্যচুক্তি থেকে মস্কোর বের হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বলেছেন, রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে বিশ্বের কোটি কোটি ক্ষুধার্ত মানুষ বিপাকে পড়বে।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এরইমধ্যে ক্ষুধায় ধুঁকছে; ব্যয় বাড়ায় জীবন বাঁচাতে হিমশিম খাচ্ছে। শস্য চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তের কারণে তাদের আরও মূল্য দিতে হবে।
‘মস্কোর এই পদক্ষেপ বিশ্বের সর্বত্র অভাবী ও দরিদ্র লোকদের বিপাকে ফেলবে। নির্বিঘ্নে খাদ্যশস্য রফতানির জন্য শস্য চুক্তি নবায়ন করা হবে- এমন আশা করেছিল জাতিসংঘ,’ যোগ করেন তিনি।
যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেনের খাদ্য শস্য রফতানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাই মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ‘কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি’ নামে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। এরপর আরও কয়েকবার চুক্তিটি নবায়ন করা হয় এবং এর অধীনে ইউক্রেন প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টন শস্য ও অন্যান্য খাবার সরবরাহ করেছে।
তবে রাশিয়া আগে থেকেই চুক্তিটি থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। সোমবার (১৭ জুলাই) ছিল সেটি নবায়নের শেষ দিন। আর শেষ মুহূর্তে এসেই সেই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় মস্কো।