Homeঅর্থনীতিঅর্থনীতিতে কী অবদান রাখছে ক্যাপাসিটি চার্জ

অর্থনীতিতে কী অবদান রাখছে ক্যাপাসিটি চার্জ

নিন্দুকের মুখে লুটেরা মডেল, কিন্তু সেই ক্যাপাসিটি চার্জকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন বিদ্যুৎ খাতের নীতিনির্ধারকরা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি মিলিয়ন কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্থনীতিতে অবদান রাখে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

গত এক যুগে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সমান তালে আলোচনায় থেকেছে কুইক রেন্টাল, ক্যাপাসিটি চার্জের মতো বেশ কিছু বিষয়। বিতর্ক উসকে দিয়ে নানা মহল থেকে বক্তব্য এলেও বিদ্যুৎ খাতের নীতিনির্ধারকরা ক্যাপাসিটি চার্জকে দেখছেন বিনিয়োগ হিসেবে, যা গড়ে দিয়েছে অর্থনীতির ভিত। কেউ কেউ লুটেরা মডেল আখ্যা দিলেও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিশ্বব্যাপীই প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি ক্যাপাসিটি চার্জ।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন সময় সংবাদকে বলেন,

এটা (ক্যাপাসিটি চার্জ) বাংলাদেশ বা বর্তমান সরকারের উদ্ভাবিত কোনো মডেল না। এ মডেল অত্যন্ত পুরোনো, প্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আপনি যখন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করবেন, তখন এর বিনিয়োগ ব্যয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে জ্বালানির ব্যয় হবে। বিনিয়োগ ব্যয়টা আসলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড হয়ে যায়।

কিন্তু এরপরও যখন বিভিন্ন মহলে সমালোচনা, তখন সম্প্রতি কয়েক দফা এ নিয়ে কথা বলেছেন স্বয়ং সরকারপ্রধান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনি যাই করতে চান না কেন, কিছু লোকের মানসিকতাই হচ্ছে–তাদের কাছে কিছুই ভালো লাগে না। অনেকেই সমালোচনা করে বলে যাচ্ছেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে নাকি ৯০ হাজার কোটি টাকা বিফলে গেছে। যারা ৯০ হাজার কোটি টাকার হিসাব করেন, তাদের বলব যে গত ১৪ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা যদি আমি খরচও করে থাকি, তবে তার বিনিময়ে আমার যে ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদন, রফতানি বেড়েছে, সেটার হিসাবটা কী?’

কিন্তু অর্থনীতিতে কী ধরনের অবদান রাখছে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি চার্জ? বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, ১৪ বছরে ৪৭ শতাংশ থেকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছেন শতভাগ মানুষ। অর্থনীতির মূল চালিকা শিল্প খাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বেড়েছে ৭৩ শতাংশ, সেচে দ্বিগুণ, আর মোট সংযোগ বেড়েছে ৩ গুণের বেশি।

বিআইডিএসের সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি মিলিয়ন কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামষ্টিক অর্থনীতিতে যোগ করে ৪ কোটি ৬০ লাখ থেকে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, গত ১৪ বছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ২৮ হাজার মিলিয়ন কিলোওয়াট আওয়ারের বেশি। অর্থনীতিতে যার সম্ভাব্য অবদান প্রায় ৭৮ লাখ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন,

নিন্দুকরা বহু কথা বলবে। ৯০ হাজার কোটি টাকার আজগুবি একটা তথ্য দিয়ে দেয়া হলো! এই আজগুবি তথ্যটাও যদি আমি ধরে নিই, তবে এই ক্ষেত্রে ৯০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। আর এটা এখন আমরা ফেরত পাচ্ছি যে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে দেশে। গ্রামাঞ্চলে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে চিন্তা করি যে উন্নত দেশের কাতারে যাবে–এসব তৈরি হয়েছে এ কারণে।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, ২০০৯ সালে উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৫ হাজার মেগাওয়াটের নিচে। ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য উৎসসহ বর্তমানে যা ছাড়িয়েছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট।

Exit mobile version