চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যাওয়া শতকোটি টাকার পণ্যবোঝাই ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’ জাহাজটি ১১ দিনেও উদ্ধার করা যায়নি। বৈরী আবহাওয়া এবং উত্তাল সাগরের কারণে পণ্যবোঝাই সেই জাহাজটি অক্টোবরের আগে উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল পর্যন্ত সন্দ্বীপ চ্যানেলে ওই জাহাজটিকে কাত হয়ে ভাসতে দেখা যায়। জাহাজটিতে এখনো ৭২টি কন্টেইনার রয়েছে। ওই কন্টেইনারের পণ্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন আমদানিকারকরা।
চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন এম ফরিদুল আলম জানান, ভাটায় কিছু অংশ দেখা গেলেও জোয়ারের সময় পুরোপুরি ডুবে যাচ্ছে ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’ নামে জাহাজটি। এমনকি কাছে গিয়ে ডুবন্ত জাহাজের পাশাপাশি কন্টেইনারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে সে অবস্থাও নেই। বিরূপ আবহাওয়ার পাশাপাশি সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
প্রান্তিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, জাহাজের শুধু দুটি ফ্লোর দেখা যাচ্ছে; কোনো কন্টেইনার দেখা যাচ্ছে না। সাগর অনেক উত্তাল। কোনো অবস্থাতেই জাহাজ উদ্ধার সম্ভব নয়। তবে চলতি বর্ষা মৌসুম এড়িয়ে আগামী অক্টোবরে ডুবন্ত জাহাজ এবং কন্টেইনার তোলার কাজ শুরুর সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমএসসি শিপিং কোম্পানির হেড অফ অপারেশন মো. আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, যেহেতু কন্টেইনারগুলো ডুবে গেছে, তাহলে কার্গো অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন এই জাহাজটি গ্লোরি শিপিং নামে একটি লিজে নিয়ে পরিচালনা করতো। এ অবস্থায় জাহাজটি দ্রুত উদ্ধারের জন্য গ্লোরি শিপিংকে চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটা যারা লিস নিয়েছে তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
গত ৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকার পানগাঁও বন্দরে যাওয়ার সময় সন্দ্বীপ চ্যানেলে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’ নামের জাহাজটি। প্রবল ঢেউয়ের মুখে পানি ঢুকতে শুরু করলে প্রথম তিনটি কন্টেইনার সাগরে পড়ে যায়। পরবর্তীতে ৬৯টি কন্টেইনার নিয়ে জাহাজটি কাত হয়ে থাকে।
পানগাঁও এক্সপ্রেস জাহাজটিতে বিভিন্ন বিদেশি অপারেটর প্রতিষ্ঠানের ৭২টি কন্টেইনার রয়েছে। এর মধ্যে এককভাবে সবচেয়ে বেশি এমএসসি শিপিংয়ের কন্টেইনার ছিলো ৩০টি। কন্টেইনার ভর্তি আমদানি করা শত কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হওয়ার মুখে পড়ায় চরম সংকটে বিদেশি এসব প্রতিষ্ঠান।