ভয়াবহ দাবদাহে নাকাল দক্ষিণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। বিশেষ করে স্পেন, ইতালি এবং গ্রিসে বেশ কয়েক দিন ধরে চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। এতে ক্ষতি হচ্ছে কৃষি এবং পর্যটন খাতে। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশে জারি করা হয়েছে স্বাস্থ্য সতর্কতা।
সামনের দিনগুলোতে দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া দফতরের এ সতর্কতার মধ্যেই রোববার (১৬ জুলাই) ইতালির ১৬টি শহরে দাবদাহের জন্য স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজধানী রোমের ওপর বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।
সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত তাপ বেশি থাকায় প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রোম ছাড়াও ফ্লোরেন্সের কেন্দ্রীয় শহর থেকে উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বে সিসিলি এবং বারির পালের্মো পর্যন্ত স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ইতালিতে এবারের গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহ অতীতের যেকোনো রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। রোমে স্থানীয় সময় রোববার (১৬ জুলাই) তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সোমবার (১৭ জুলাই) এ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে, যা ২০০৭ সালের আগস্টে হওয়া সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের রেকর্ড ভেঙে দেবে।
উরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি সতর্ক করে বলেছে, ভূমধ্যসাগরের সিসিলি ও সার্ডিনিয়া দ্বীপপুঞ্জে তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে, যা ইউরোপে যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ।
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গ্রিসের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র আর্কোপলিস সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে অ্যাথেন্স প্রশাসন। স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ জুলাই) এ শহরে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেয়া হয়। আরেক শহর থিবসে গত শুক্রবার ৪৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কাবু করে বাসিন্দাদের। এছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড ও স্পেনের কিছু এলাকার ওপর দিয়েও তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে।
স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপ লা পালমার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর গরমের অনুভূতি যেন আরও বেড়েছে। রোববার পর্যন্ত এখান থেকে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দ্বীপটিতে সাড়ে চার হাজারের বেশি জমি ও এক ডজন বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
এ অবস্থায় আঞ্চলিক সরকার পার্শ্ববর্তী দ্বীপ তেনেরিফে ও গ্রান গ্র্যানেরিয়ায় দাবানলের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছে। ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো ক্লাভিজো আগুনের দ্রুত বিস্তারের জন্য বাতাস, জলবায়ু পরিস্থিতি এবং তাপপ্রবাহকে দায়ী করেছেন।
ইউরোপে তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দুই বছর আগে রেকর্ড করা হয়েছিল সিসিলিতে। সামনের দিনগুলোতে এ রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।