মাত্র ছয় বছর বয়সে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সাত বছর বয়সে যেখানে সবার হাতে কলম ওঠে সেই বয়সে তার হাতে উঠেছিল সিগারেট। পরের বছর সেই ছেলেটাই জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসায়। নিজের ভয়াবহ জীবনের ঘটনা এমনভাবে বর্ণনা করেছেন ইংলিশ ফুটবলার দেলে আলি।
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবলার গ্যারি নেভিলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও ছোটবেলার যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায়ের কথা জানিয়েছেন তিনি। দেলে আলির ছোটবেলার গল্প শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে যে কারও।
শৈশবে নিজের মায়ের বন্ধুর কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার হন দেলে আলি। সেসময় তার মা বুঁদ হয়ে থাকতেন নেশায়। সুদিনের খোঁজে আফ্রিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন আলি। সেখানে গিয়েও সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। শুরুটা ধূমপান দিয়ে। এরপর জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসার সঙ্গেও।
সাক্ষাৎকারে বীভৎস সব অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে দেলে বলেন, ‘সেসময় আমাকে একজন বলেছিল, আমি ছোট হওয়ায় আমাকে কেউ মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে সন্দেহ করবে না। আমি ফুটবল নিয়ে ঘুরতাম আর মাদক নিয়ে আসতাম। ১১ বছর বয়সে এক লোক আমাকে একটি সেতুতে ঝুলিয়ে দেয়। এরপর আমাকে একটি পরিবার দত্তক নেয়।’
দত্তক নেয়ার পর বদলানো শুরু হয় দেলের জীবন। সাক্ষাৎকারে সেই পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি ইংলিশ ফুটবলার। বলেন, ‘তারা আমাকে দত্তক নেয়ার পর খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে পেরেছি। তারা সত্যিই দারুণ। শুরুতে মানিয়ে নেয়া কঠিন ছিল। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাদের কাছে একজন ভালো ছেলে হিসেবে থাকার জন্য। তাদের কল্যাণেই ১২ বছর বয়সে প্রফেশনাল ফুটবলে যোগ দিই।’
বর্তমানে ইংলিশ ক্লাব এভারটনের হয়ে খেলছেন দেলে। গত মৌসুমে তুরস্কের ক্লাব বেসিকতাস ধারে নিয়েছিল তাকে। এরপর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয় তার। নিয়মিত ঘুমের ওষুধ সেবন করায় যেতে হয় রিহ্যাব সেন্টারেও। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের।