রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী সপ্তাহে শেষ হতে যাওয়া কৃষ্ণ সাগর হয়ে শস্য রপ্তানির চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছেন— শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান এমনটাই দাবি করেছেন। তবে রুশ সংবাদ সংস্থাগুলো ক্রেমলিনের মুখপাত্রকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এরদোয়ানের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেননি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পাঁচ মাস পর স্বাক্ষরিত চুক্তিটি সোমবার শেষ হতে চলেছে এবং পুতিন বারবার রাশিয়ার নিজস্ব রপ্তানিতে বাধার কারণে এটি পুনর্নবীকরণ না করার হুমকি দিয়েছেন। এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট কমাতে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পর্কে কথা বলেছেন।
তুর্কি নেতা বলেন, ‘আমরা আগস্টে পুতিনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমরা কৃষ্ণ সাগরের শস্য করিডোর সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত।’ অনদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি নেই।
জাকার্তায় ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন রাশিয়াকে চুক্তিটি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে বলেছিলেন, এটি ছাড়া সবচেয়ে দুর্বল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আলোচনার পর ব্লিনকেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই অঞ্চলসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মূল্য দিতে হবে, যার মধ্যে আক্ষরিক অর্থে উচ্চতর খাদ্যের দাম রয়েছে, পাশাপাশি বৃহত্তর খাদ্য ঘাটতিও রয়েছে।
’
এ ছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সপ্তাহে পুতিনকে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি রাশিয়াকে তাদের সার রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সমর্থন করেন। এরদোয়ান বলেন, তিনি আশা করেন যে ‘এই চিঠির মাধ্যমে আমরা আমাদের এবং রাশিয়ার যৌথ প্রচেষ্টায় শস্য করিডোরের সম্প্রসারণ নিশ্চিত করব।’
এর আগে বৃহস্পতিবার পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, চুক্তিটি কার্যকর করতে মস্কোর শর্তগুলোর মধ্যে একটিও পূরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে কিছুই করা হয়নি, কিছুই করা হয়নি। সবই একতরফা।’ পুতিন একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা কী করব তা নিয়ে ভাবব, আমাদের কাছে আরো কয়েক দিন সময় আছে।’
চুক্তিটি ইউক্রেনকে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ৩২ মিলিয়ন টন শস্য পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। বেশিরভাগ শস্য আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গেছে। যদি রপ্তানি আবার বন্ধ করা হয়, তাহলে খাদ্যের দাম এখনকার চেয়েও বেড়ে যেতে পারে।
সূত্র : এএফপি