কক্সবাজারের লবণ ব্যবসায়ী আশরাফুজ্জামান মামুন ঢাকায় ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতে এসে আটক হলেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে। ১০ হাজার পিস ইয়াবার একটি চালান ঢাকার পার্টির কাছে পৌঁছে দিতে পারলে তিনি পেতেন ৫০ হাজার টাকা।
দুই মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কয়েকটি চালান ঠিকঠাক পৌঁছে দিলেও রোববার (৯ জুলাই) গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়েন মামুন। তার দাবি, জেলখানায় বড় মাদক কারবারিদের কাছ থেকে শিখেছেন চোরাচালানের কৌশল।
ডিবি পুলিশ জানায়, মগবাজার রেলগেট এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধি দেখা যায় ব্যাগ হাতে থাকা ওই ব্যক্তির। কিছুটা অস্বাভাবিক হাঁটাচলা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দেয় গোয়েন্দাদের। কক্সবাজার থেকে ইয়াবার বড় চালান ঢুকছে ঢাকায় তথ্য ছিল আগেই। চ্যালেঞ্জ করা হয় ব্যাগ হাতে থাকা ওই ব্যক্তিকে। শুরু হয় তল্লাশি।
ব্যাগে জামাকাপড় ছাড়া কিছুই নেই। শরীরে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত সেই বস্তু। একের পর এক নিজেই বের করে দিলেন ইয়াবার প্যাকেট। এখানেই শেষ নয়, পুরো শরীরের বিভিন্ন অংশেই বিশেষ কৌশলে লুকানো ছিল ইয়াবার প্যাকেট।
স্বীকারোক্তিতে মামুন বলেন,
আমি লবণ ব্যবসা করতাম। তখন একজনের কাছ থেকে টাকা পেতাম। টাকা নিয়ে ঝগড়া হওয়ায় তিনি আমাকে মাদক মামলায় ফাসিয়ে দেন। সেই মামলার মধ্যে জেলে থাকা অবস্থায় আরেকটি মামলা খেয়েছিলাম। তখন আমার মন অন্য রকম হয়ে যায়। কারাগার থেকে বের হয়েছি ২ মাস হবে। আগে আমি এ কাজ করতাম না। কারাগারে থাকার সময় এই কৌশল শুনেছিলাম।
তিনি বলেন, ‘চালান ঢাকার আনার ক্ষেত্রে খরচ সব তাদের। মানে যাওয়া-আসা গাড়ি ভাড়া সব তাদের। চালানটা নিয়ে আসলে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়।’
পুলিশ বলছে,
অভিনব কৌশলে মাদক চোরাচালান নতুন নয়। রাজধানীতে যত মাদকের চালান ঢোকে তার দশভাগেরও কম ধরতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চাহিদা যত দিন থাকবে ততদিন মাদকের চালান আসতেই থাকবে। এখনও মাদক কারবারিদের অনেক কৌশল অজানা পুলিশের কাছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশেল লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, ‘মাদক সেবনের জন্য হন্যে হয়ে থাকলে, নিজ থেকে নিবৃত্ত না হলে যত বেড়াই দেয়া হোক, তারা কৌশলে সেই বেড়া ফুটো করে বের হয়ে আসবেই। তবে যারা বিভিন্ন কৌশলে এসব কাজ করে, আমরা কোনোভাবে খবর পেলেই তাদেরকে ধরি।’
মশিউর রহমান বলেন,
কক্সবাজারের এই আশরাফ একটি গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত যুবক। সে স্নাতক পাস করেছে। মাদকসেবীদের কাছে চাহিদা থাকার কারণে এ ধরনের ছেলেরাও এ পথে পা বাড়াচ্ছে। এ কাজে সে ৩ বার পুলিশেল কাছে ধরা খেয়েই জেলে গেছে।