কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে ধর্মঘটে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। রবিবার সকাল থেকে ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। এ কারণে মিয়ানমার থেকে নদীপথে টেকনাফ স্থলবন্দরে স্তূপ করে রাখা মালামাল উঠানামা বন্ধ রয়েছে। স্থলবন্দর থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক যায়নি। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘স্থলবন্দরে কর্মবিরতির খবর শুনেছি। দ্রুত ট্রাক মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
স্থলবন্দরে গিয়ে সব কার্যক্রম বন্ধ দেখা গেছে। কোনো ধরনের মালামাল উঠানামা করেনি। তবে সকালে সাড়ে তিন হাজার আদার বস্তা নিয়ে একটি ট্রলার মিয়ানমার থেকে নদীপথে এসে টেকনাফ স্থলবন্দরের ঘাটে পৌঁছে। শ্রমিক না থাকায় আদাভর্তি ট্রলারটি জেটি ঘাটে নৌঙর করে আছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা আজগর মাঝি বলেন, কোরবানির ঈদে কাঠভর্তি একটি ট্রাক আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী ট্রাক মালিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে স্থলবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শুনেছি ধর্মঘট চলছে।’
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘ট্রাক না পাওয়ায় আমরা (ব্যবসায়ীরা) মালামাল খালাস করতে পারিনি। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা ছিল না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ার পরও ট্রাক চালক-শ্রমিকদের বিশ্রামাগার, পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকাসহ হয়রানির অভিযোগে এ ধর্মঘট চলছে। তবে এর পেছনে মূল নেপথ্য ব্যবসায়ীদের ভূমিকা বলে জানা গেছে। এছাড়া ট্রাক শ্রমিকের কিছু অসাধু লোকজন স্থলবন্দর থেকে মালাবাহী ট্রাক বের করে নিরাপদ স্থানে গিয়ে মাদক বহন করে থাকে। এ নিয়ে তাদের মধ্যও দ্বন্দ্ব রয়েছে।
টেকনাফ ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব জাফর আহমেদ বলেন, ‘চালক-শ্রমিকদের বিশ্রামাগার, পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হলেও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো পূরণ করছে না। তাই আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মরতি পালন করছি। আমরা আশা করছি বন্দর কর্তৃপক্ষ শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করবেন।’
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিক না আসার কারণে সকাল থেকে স্থলবন্দরে পণ্য উঠানামা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু কারা কী কারণে ধর্মঘট ডেকেছে সে বিষয়ে আমরা জানি না। কেউ এ বিষয়ে আমাদের জানায়নি।’