ইউক্রেনকে নিষিদ্ধ ও বহুলবিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা বা গুচ্ছ বোমা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমায় বহু বেসামরিক নাগরিক হত্যার রেকর্ড থাকায় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তের সাফাই গেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেয়ার সিদ্ধান্তকে ‘খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সময় নিতে হয়েছে। কিন্তু তিনি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ইউক্রেনের গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের নেতারা।
তবে অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি কানাডা ও স্পেন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের পক্ষে নয়। মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ঋষি সুনাক শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ক্লাস্টার বোমার উৎপাদন, মজুত ও ব্যবহার বন্ধে ১২৩টি দেশ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি সই করেছে। এসব দেশের তালিকায় যুক্তরাজ্যও রয়েছে। যুক্তরাজ্য এ অস্ত্রের ব্যবহারকে সবসময় নিরুৎসাহিত করে।’
এ বিষয়ে স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেনকে সহায়তা হিসেবে কিছু কিছু অস্ত্র সরবরাহ করা যাবে না, এ বিষয়ে তার দেশ দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার গুরুত্ব আমরা উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু ক্লাস্টার বোমা দিয়ে তা নিশ্চিত করা যাবে না।’
মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কানাডা সরকার বলে, ‘আমরা ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার সমর্থন করি না। ক্লাস্টার বোমার কারণে বহু বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিশু হত্যা যেন আর না হয়, তাই আমরা এর অবসান ঘটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তবে শুক্রবার (৭ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, ‘এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।’
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিনিশনস (সিসিএম) এই বোমার মজুত, উৎপাদন এমনকি স্থানান্তরকেও নিষিদ্ধ করেছে। সেই কনভেনশনে ১২৩টি দেশ যোগ দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, রাশিয়াসহ ৭১টি দেশ যোগ দেয়নি।