‘সময় আর নেই, সরকারের সময় শেষ’ বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যকে অসাংবিধানিক ও রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন,
বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্র বিরোধী ও ষড়যন্ত্র নির্ভর রাজনৈতিক দল। তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা চালায়। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ বা সময়সীমা নির্ধারণের এখতিয়ার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা বিএনপির নেই। সরকারের সময় নির্ধারণ করে দেয়ার তিনি কে? জনগণ ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারকে সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদ শেষে গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতা দখলে বেপরোয়া বিএনপি বিদেশি প্রভুদের করুণা লাভের আশায় মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে। তাদের বিদেশি প্রভুরা নির্বাচন নিয়ে কী বলবে সেদিকে তারা মুখিয়ে থাকে। ক্রমাগতভাবে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে দেশের জনগণের ওপর বিএনপি বিশ্বাস হারিয়েছে। বিদেশি প্রভুদের দ্বারা মদদপুষ্ট হয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্ধারণ করছে। ফলে বিএনপি কখনোই জনকল্যাণের নীতি গ্রহণ করতে পারেনি এবং জনগণও তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, বিএনপি নেতাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। বিএনপি ক্ষমতায় এসে এ দেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করেছিল, ভোট চুরির নিকৃষ্টতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল। বিএনপি আমলে পরিচালিত অপশাসন ও দুর্নীতির কথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সংখ্যালঘুদের ওপর নারকীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছিল, ভিন্ন মত দমনে ইতিহাসের জঘন্য নজির স্থাপন করেছিল।
বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সেই অন্ধকারময় সময়ে ফিরে যেতে চায় না। দেশের জনগণ তাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বারবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে নিরাপদ মনে করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার সর্বদা জনকল্যাণের নীতিকে প্রাধান্য দিয়ে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। উন্নয়ন অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনেও বাংলাদেশের জনগণ পুনরায় আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দেবে, ইনশাল্লাহ।
এর আগে গতকাল সোমবার (৩ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব পরিষ্কার, অবিলম্বে পদত্যাগ করেন এবং সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই বলেন না কেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দেন, তারা নতুন নির্বাচন কমিশন করে নির্বাচন করবে। এটাই একমাত্র পথ, আর কোনো পথ নেই। না হলে পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। কারণ এর আগে বলেছি, আপনাদের সময় আর নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে।’