কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের মামলায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার মধ্যরাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইমাম হোসেন নামের এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
ইমাম হোসেন মাতারবাড়ি এলাকার সাইরার ডেইল এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে এবং এ মামলার প্রধান আসামি বাইট্টা কামালের ভাই।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, এই মামলায় এর আগে সাত জনকে গ্রেফতার করে আদালতের আদেশে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করলেও একজন তা দেননি। এসব জবানবন্দি ও রিমান্ডে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত অনন্ত ৩০ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। যাদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করলেও এসব অভিযুক্তরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, আত্মগোপনে আছে। ঈদে মাতারবাড়িতে অবস্থান নেয়ার খবর পেয়ে রোববার মধ্যরাতে বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ইমাম হোসেনকে সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন ট্রলারটিকে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। পুলিশ এ মামলায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল। এর মধ্যে ছয় জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেন।
এরা হলেন-মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন। গ্রেফতারদের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি করিম সিকদার জবানবন্দি প্রদান করেননি।
তবে ছয় জনের জবানবন্দিতে গভীর সাগরে একটি ট্রলারকে ঘিরে ১০ জনকে পিটিয়ে হাত পা বেঁধে কোল্ড স্টোরেজের বা হিমঘরে বন্দি করে হত্যা করার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। বলা হচ্ছে, এই ঘটনায় ব্যবহার হওয়া পাঁচটি ট্রলারে মালিকদের নামও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যেসব ট্রলারে অংশ নিয়ে ছিলেন ৪০-৫০ জন। যার মধ্যে অনন্ত ৩০ জনের নাম পরিচয়ও পাওয়া গেছে।
পুলিশ বলছে, এই ঘটনা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান করেছে সোনাদিয়া এলাকার আত্মসমর্পণকারী সুমন ডাকাতের নেতৃত্বে কয়েক জন। তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হলে ঘটনার পুরো রহস্য জানতে পারবে পুলিশ।