দিনাজপুরে একটি গ্রামে রহস্যজনকভাবে মাটিতে গর্ত সৃষ্টির ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাজুড়ে। ফসলি জমি, বাড়ির উঠানসহ খোলা মাঠের মাটি দেবে গেছে। প্রতিটি গর্তের গভীরতা ৩ থেকে ৪ ফুট। গর্ত সৃষ্টির ঘটনাকে কেউ বলছেন অলৌকিক ঘটনা, কারও কাছে তেলের খনি থাকার সম্ভাবনা। তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মাটির নিচে পানির স্তর নেমে যাওয়াই এর মূল কারণ।
শুক্রবার (৩০ জুন) রাতে সদর উপজেলার উমর পাইল গ্রামে হঠাৎ মাটি দেবে যাওয়ার শব্দে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। শব্দের উৎসের দিকে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে তৈরি হয়েছে গর্ত।
মাটি দেবে যাওয়ার বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা গ্রামপুলিশ জমির সবাইকে জানানোর পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা দেখেন ফসলি জমি, বাড়ির উঠানসহ খোলা মাঠের মাটি দেবে গেছে। প্রতিটি গর্তের গভীরতা ৩ থেকে ৪ ফুট। গর্ত সৃষ্টির ঘটনাকে কেউ বলছেন অলৌকিক ঘটনা, আবার কেউ বলছেন স্বাভাবিক ঘটনা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো কারণে ভূমিধস হয়েছে। তবে জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। তবে রংপুর অঞ্চলটি ভূমিকম্প জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘটনাগুলো আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।’
এদিকে সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সাথী দাস এলাকাটি পরিদর্শনকালে বলেছেন, বিভিন্নস্থানে মাটি দেবে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সিংকহোলের দিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়ে মৃত্তিকা বিশেষজ্ঞ হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্তিকা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শাহাদাত হোসেন খান জানান, মাটির নিচে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে। তবে আবারও এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উমরপাইল বালুপাড়া গ্রামে হঠাৎ করেই প্রায় ১০টি গর্তের সৃষ্টি হয়। প্রতিটি গর্তের গভীরতা প্রায় তিন থেকে চার ফুট।