ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ জনের মাঝে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। বাকি ৩ জনের সন্ধান এখনও মেলেনি।
রোববার (০২ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে জাহাজের ইঞ্জিনরুম থেকে তার দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া আব্দুস সালাম ওরফে হৃদয় জাহাজের গ্রিজার (ইঞ্জিন রুমে ইঞ্জিনিয়ারের সহকারী)। তিনি হবিগঞ্জের মাদবপুরের রমজান মিয়ার ছেলে।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফায়েত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ইঞ্জিনরুম থেকে হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মামা শফিকুল ইসলাম মরদেহটি সনাক্ত করেছেন। হৃদয় কয়েক বছর ধরে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে গ্রিজার পদে কাজ করেন। দুর্ঘটনার সময় তিনি ইঞ্জিন রুমের দায়িত্বে ছিলেন।
বাকিদের উদ্ধারে তৎপরতা চালু আছে বলেও জানান শাফায়াত।
এদিকে, জাহাজ বিস্ফোরণে নিখোঁজদের খোঁজে সুগন্ধা পাড়ে স্বজনদের কান্নার রোল। নদী পাড়ে রাতেও খুঁজে ফিরেছেন স্বজনরা।
স্বজনদের সূত্রে নিখোঁজদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন, জাহাজের মাস্টার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুহুল আমীন খান, সুপার ভাইজার চাঁদপুর জেলার মাসুদুর রহমান বেলাল এবং চালক পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আকরাম হোসেন। নিখোঁজ আরও একজনের নাম এখন জানা যায়নি।
নিখোঁজ সুপার ভাইজার মাসুদুর রহমান বেলালের শ্যালক আলিমুজ্জামান শিমু ও চাচাতো ভাই মো. আলাউদ্দিন জানান, মাসুদুর রহমান বেলাল ইঞ্জিন রুমে ছিলেন। বিস্ফোরণে জাহাজের পেছনের অংশের সঙ্গে উড়ে গিয়ে তিনি হয়ত নিখোঁজ হয়েছেন।
নিখোঁজ আকরাম হোসেনের ভাতিজা কাইয়ুম বলেন, ‘কাল সন্ধ্যা থেকে আমার চাচাকে হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। কোস্টগার্ড উদ্ধারের নামে জাহাজের তেল খালাসে ব্যস্ত। নিখোঁজদের উদ্ধারে কোনো তৎপরতা নেই।’
এদিকে ঘটনার পর থেকেই ঝালকাঠি জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও জাহাজের উদ্ধার হওয়া বাবুর্চি বলে আসছেন জাহাজটিতে মোট ৯ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জন দগ্ধ হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন।
তবে শনিবার (১ জুলাই) বিকেলে বরিশাল নৌপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্বীনে আলম জানিয়েছিলেন দুর্ঘটনায় কোনো নিখোঁজ নেই। আর এ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। তবে কোস্টগার্ড নিখোঁজের কথা স্বীকার করলেও ঠিক কারা এবং কতজন এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।