‘নতুন ম্যারাডোনা’ তকমা নিয়ে ফুটবলে আগমন হয়েছিল লিওনেল আন্দ্রেস মেসির। তবে সময়ের সঙ্গে নিজের নামেই বিখ্যাত হয়েছেন তিনি। এমনকি অনেকের মতেই সর্বকালের সেরা ফুটবলারই আর্জেন্টিনার এই খুদে জাদুকর। তবে বিশ্বকাপে বারবার ব্যর্থ হওয়ায় কোথায় যেন একটা অসম্পূর্ণতা রয়েই গিয়েছিল। কাতারে বিশ্বকাপের শিরোপা পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে মেসির ক্যারিয়ারে।
ক্লাব পর্যায়ে এমন কোনো শিরোপা নেই যা লিওনেল মেসি জেতেননি। বার্সেলোনা ও পিএসজির হয়ে লিগ তো জিতেছেনই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ সম্ভাব্য সব শিরোপাই তার ঝুলিতে আছে। ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যালন ডি’অর ও বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও ছিল মেসির দখলে। শুধু কমতি ছিল একটাই, আর্জেন্টিনার হয়ে কোনো শিরোপা যে জিততে পারেননি তিনি। তবে সেই আফসোস কাটে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জিতে।
কাতার বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেই মেসি জানিয়ে দিয়েছিলেন- এটিই তার শেষ বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে বিদায় নেওয়ার আকুতি ঝরেছিল এই কিংবদন্তির কণ্ঠে। অবশেষে ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে স্বপ্ন পূরণ করেন মেসি। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। মেসিও সর্বজয়ী এক ফুটবলারে পরিণত হন।
এই মুহূর্তে জন্মশহর রোসারিওতে ছুটি কাটাচ্ছেন মেসি। সেখানে বিএইন স্পোর্টসকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মেসি, গত শুক্রবার (২৩ জুন) যে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ প্রকাশ হয়। পরদিন মুক্তি পাওয়া সেই সাক্ষাৎকারে মেসি কাতার বিশ্বকাপ ও সৌদি আরবের বিপক্ষে সেই হারের বিষয়ে কথা বলেন। সেখানেই তিনি জানান, তার সবকিছু জেতা হয়ে গেছে, কিছুই আর বাকি নেই।
সৌদি আরবের বিপক্ষে সেই অপ্রত্যাশিত হারের বিষয়ে মেসি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচেই এভাবে শুরুটা (হার দিয়ে) অন্যতম চাবিকাঠি (জয়ের) ছিল। এটা আমাদের জন্য একটা কঠিন শিক্ষা ছিল। সেখান থেকে আমরা ভিন্নভাবে খেলা শুরু করি কারণ আমরা জানতাম, একটা ভুলও আমাদের আসর থেকে বের করে দিতে পারে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা বিশ্বাস করে বসে ছিলাম, ওই (সৌদি আরবের বিপক্ষে) ম্যাচটি গ্রুপ পর্বের সবচেয়ে সহজ ম্যাচ হতে যাচ্ছে এবং বিপরীতটাই ঘটেছিল। আজ যখন পেছনে ফিরে সবকিছু ফের দেখি, যা কিছু হয়েছে, এটা সঠিক সময়ে আমাদের জাগিয়ে দিয়েছে এবং এটা আমাদের প্রস্তুত করেছে।’
বিশ্বকাপ জেতার পর মেসির জীবনে কী কী পরিবর্তন এসেছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মেসি জানান, তার জীবনের সবকিছুই আগের মতো আছে। শুধু তার চাওয়া সবকিছুই ধরা দিয়েছে। শুধু এখানেই বিশ্বকাপের আগের জীবনের সঙ্গে পার্থক্য দেখছেন তিনি।
মেসি বলেন, ‘আমার দিনগুলো, আমার জীবন কিংবা অনুশীলনে সত্যি বলতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোনো পরিবর্তনই আসেনি। একমাত্র যে জিনিসটা আমার চোখে পড়েছে তা হচ্ছে বিশ্বকাপের ইতিহাসে আরও একটা তারা যোগ হয়েছে আমাদের। কোনোকিছুই বাকি নেই আর। আমি সব পেয়ে গেছি।’