নেইমার ও তার বর্তমান প্রেমিকা ব্রুনা বিয়ানকার্দি জুটি প্রথমবারের মতো সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। এই খবর অবশ্য পুরনো। ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থাকা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে নিয়ে নতুন খবর চাউর হয়েছে গণমাধ্যমগুলোতে। সন্তানসম্ভবা প্রেমিকাকে ঠকানোয় অনুশোচনায় ভুগছেন ৩১ বছর বয়সী নেইমার।
ইনজুরির কারণে ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠের বাইরে নেইমার। দারুণভাবে মৌসুম শুরু করেও মৌসুমের বড় একটা সময় মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে তাকে। ক্লাব পিএসজিও নাখোশ হয়ে তাকে ছেড়ে দিচ্ছে এমন গুঞ্জনও আকাশে বাতাসে। বিশ্বকাপের পর ব্রাজিল তিনটি ম্যাচ খেলে ফেললেও ইনজুরির কারণে মাঠে নামা হয়নি তার।
মাঠে সময়টা ভালো না গেলেও মাঠের বাইরে দারুণ কাটছিল নেইমারের সময়। বর্তমান প্রেমিকা ব্রুনা বিয়ানকার্দির গর্ভে নেইমারের সন্তান বেড়ে উঠছিল। এই জুটি অপেক্ষা করছিল প্রথম সন্তানের। তবে সুসময় দীর্ঘস্থায়ী হলো না। প্রেমিকার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ উঠেছে নেইমারের বিপক্ষে। যে অভিযোগ স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলা চিঠিতে ক্ষমাও চেয়েছেন ব্রাজিলের ফুটবলের পোস্টার বয়।
এই গ্রীষ্মেই নেইমার তার প্রেমিকার সন্তানধারণের বিষয়টি প্রকাশ করেন। বছরের শেষ অর্ধে এই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা। তাই গত কয়েকমাস ধরে দুজন একই সঙ্গে থাকছেন। এরই মাঝে কয়েকমাস ধরে দুজনের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ব্রাজিলিয়ান ব্লগার ফের্নান্দা কাম্পোসের একটি দাবি থেকে। তিনি ব্রাজিলিয়ান সাইট মেট্রোপলসের কাছে জানান, বিয়ানকার্দির সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন সময়েই নেইমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছেন তিনি।
কাম্পোস জানান, কাতার বিশ্বকাপের সময় থেকেই তিনি ও নেইমার বার্তা চালাচালি শুরু করেন। কিন্তু তিনি তখন নেইমারের সঙ্গে বিয়ানকার্দির সম্পর্কের বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
ফার্নান্দা আরও দাবি করেন, নেইমার ও তিনি ব্রাজিলিয়ান ভালোবাসা দিবসের দিনটি একসঙ্গে উদযাপন করেন। সেদিন তারা শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠও হন। পরবর্তীতে মেট্রোপলসের কাছে তিনি এই সম্পর্কের বিষয়টি জানান।
এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পিএসজি তারকা তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সবকিছুই করেছেন, কিন্তু তিনি তার ডাক উপেক্ষা করেন। এরপর নেইমার তাকে তার খ্যাতির জন্য ব্যবহারের দায়ে অভিযুক্ত করেন এবং চিরতরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এই ঘটনার জন্য নেইমার তার প্রেমিকা বিয়ানকার্দির কাছে ক্ষমা চান। তবে মঙ্গলবার (২০ জুন) ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক এরলান বাস্তোস এই ঘটনাটি জনসম্মুখে নিয়ে এলে শুরু হয় নানান আলোচনা। তাই অবশেষে জনসম্মুখেই ক্ষমা চাইলেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে দীর্ঘ এক খোলা চিঠিতে লিখেন, ‘আমি একটি ভুল করেছি। আমি তোমার সঙ্গে একটি ভুল কাজ করেছি। আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, আমি প্রতিদিন মাঠে ও মাঠের বাইরে অসংখ্য ভুল করি। কিন্তু আমি আমার ব্যক্তিজীবনের ভুলগুলো ঘরেই আটকে রাখি। আমার পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে এবং আমার বন্ধুদের সঙ্গেও। এসবই আমার জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিটির জীবনে প্রভাব ফেলছিল। যে নারীটিকে আমি আমার পাশে নিয়ে চলার স্বপ্ন দেখেছি, সে আমার সন্তানের মা। এটা তার পরিবারের কাছে পৌঁছে গেছে, যেটা এখন আমারও পরিবার।’
তিনি যোগ করেন, ‘ব্রুনা, নিজের ভুলের জন্য আমি আগেই ক্ষমা চেয়েছি। অকারণে যে গুঞ্জন চলছে সে জন্য। কিন্তু আমি সবার সামনেই স্বীকার করছি, ব্যক্তিগত কোনো বিষয় যখন সামনে চলে আসে, তখন সে বিষয়ে সবার সামনেই ক্ষমা চাওয়া উচিত। তোমাকে ছাড়া আমি নিজেকে ভাবতে পারি না। অবশ্যই সন্তানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং যে লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি, তাতে সফল হতে পারব। একে অপরের প্রতি ভালোবাসাই আমাদের আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রুনার সঙ্গে কাজটি যে ঠিক করেননি তা স্বীকার করে নিয়ে নেইমার আরও বলেন, ‘ব্রুনা, আমি এটা তোমাদের (বিয়ানকার্দি এবং সন্তান) জন্য করছি। অসমর্থনীয় বিষয়কে যৌক্তিক বানানোর চেষ্টা করছি। এটা করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু তোমাকে আমার জীবনে প্রয়োজন। আমি জানি, এসব ঘটনায় তুমি কতটা ভুগছ এবং কতটা আমার পাশে থাকতে চাও। আমিও তোমার পাশে আছি। আমি ভুল করেছি। তোমার সঙ্গে ঠিক কাজটা করিনি।’
তবে ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক বাস্তোসের দাবি, ব্রুনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একটি ‘চুক্তি’ আছে নেইমারের। পিএসজি তারকা চাইলে অন্য কারও সঙ্গে প্রেম করতে পারবেন। কিন্তু ব্রুনা বিয়ানকার্দি এই দাবি অস্বীকার করে বাস্তোসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।