প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অন্যান্য অনেক বিষয়ের মধ্যে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন উদ্বেগের কথা তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে মোদিকে কোনো ‘লেকচার’ দেবেন না তিনি। এ কথা বলেছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনদিনব্যাপী ঐতিহাসিক এই সফরে হোয়াইট হাইজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকে বাইডেন ও মোদি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত বেশ কিছু চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মোদির এই যুক্তরাষ্ট্র সফরের মদ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন একদল মার্কিন কংগ্রেসম্যান। তারা দাবি করেছেন, ওয়াশিংটন সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় দেশটির গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যু নিয়েও আলোচনা করতে হবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২০ জুন) ৭৫ মার্কিন কংগ্রেসম্যান একসঙ্গে এই চিঠি লিখেন। এই ৭৫ জনের মধ্যে সিনেট এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস উভয় কক্ষের সদস্যই রয়েছেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করা সব নেতাই ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির।
মার্কিন সিনেটর সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য প্রমীলা জয়পাল ওই চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমরা কোনো নির্দিষ্ট ভারতীয় নেতা বা রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না, এটি ভারতের জনগণের সিদ্ধান্ত। তবে আমরা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির একটি মূলনীতিভিত্তিক কিছু বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘শ্রদ্ধার সঙ্গে আমরা আপনাকে (জো বাইডেন) অনুরোধ করছি, প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় আপনি সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। যাতে দুই মহান দেশের মধ্যে একটি সফল, শক্তিশালী এবং দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।’
চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতে ‘উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার সমস্যা’ ও ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা’ ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে ভারতের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পরিস্থিতি নয়, মোদির সফরে বিভিন্ন ইস্যুতে কৌশলগত অংশীদারত্বের বিষয়ে জোর দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (২১ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন গণমাধ্যম, ধর্মীয় বা অন্যান্য স্বাধীনতার প্রতি চ্যালেঞ্জ দেখে, তখন সে ব্যাপারে ‘আমরা আমাদের মতামত জানাই।’ সুলিভান আরও বলেন, ‘আমরা সেটা এমনভাবে করি যেখানে আমরা আসলে লেকচার দিতে চাই না।’
মোদির সঙ্গে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পরিস্থিতি তোলা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুলিভান বলেন, ‘মোটকথা, ভারতের রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের কিভাবে চলবে তা তাদের জনগণই নির্ধারণ করবে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ধারণ করবে না।’