ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইঁদুরে সংখ্যা এত বেশি হয়ে গেছে যে, তা নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা শহরটির মেয়র বলেছেন, প্যারিসবাসীর উচিত ইঁদুরের সঙ্গে সহাবস্থানে অভ্যস্ত হওয়া।
প্যারিসের ডেপুটি মেয়র অ্যান সুইরিস বৃহস্পতিবার (৮ জুন) শহরটির মেয়র পরিষদের এক বৈঠকে এ কথা বলেছেন। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সুইরিস জানিয়েছেন, প্যারিসের মেয়র অ্যান হিদালগো এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছেন। যার কাজ হবে ইঁদুরকে নির্মূল না করে কোনোভাবে শহরে সাধারণ মানুষের অবস্থান নিশ্চিত করা যায় কিনা সে উপায় খুঁজে বের করা।
এ বিষয়ে সুইরিস বলেছেন, ‘মেয়রের নির্দেশনা অনুসারে, আমরা শহরে মানুষ এবং ইঁদুরের সহাবস্থানের বিষয়টি ভেবে দেখতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ নতুন এই সিদ্ধান্ত আগের সিদ্ধান্তের ঠিক বিপরীত।
আগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় শহরটিতে আনুমানিক ৬০ লাখ ইঁদুর ছিল। ২০১৭ সালে ফ্রান্সের রাজধানীর কর্তৃপক্ষ একটি ইঁদুররোধী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। যার বাজেট ছিল প্রায় ১৮ লাখ ডলার। কিন্তু সেই পরিকল্পনা খুব একটা কাজ করেনি।
বর্তমানে শহরটিতে মানুষের চেয়ে ইঁদুরের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। এতটাই বেশি যে, মানুষ ও ইঁদুরের সংখ্যার অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১:৩ এ। এ অবস্থায় সুইরিসের পরামর্শ হলো, সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ইঁদুরের সঙ্গে প্যারিসবাসীর সহাবস্থান এবং বিষয়টি যেন মানুষের জন্য অসহনীয় না হয় তা প্যারিস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে।
ইঁদুরের সঙ্গে প্যারিসের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৪ শতকে বিউবোনিক প্লেগ ছড়ানোর অন্যতম কারণ বা বাহক ছিল এই ইঁদুর। এই মহামারিতে প্যারিসের অর্ধেক জনসংখ্যা মারা গিয়েছিল। আবার ফ্রাঙ্কো প্রুশিয়ান যুদ্ধের সময় যখন প্যারিস অবরোধ করা হয়, তখন এই ইঁদুরের কারণেই প্যারিসবাসী অনাহারের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল।
আধুনিক সময়ে এসে কেবল প্যারিসই যে ইঁদুরের সংকটের মোকাবিলা করছে তা নয়। মার্কিন শহর নিউইয়র্কও একই সমস্যায় ভুগছে। শহরটি ইঁদুর দমনে চলতি বছরের এপ্রিলে ‘র্যাট জার’ নামে একটি বিশেষ বাহিনীও গঠন করেছে। এ ছাড়া ফ্রান্সের শহর তুলুজও একই ধরনের সমস্যা সমাধানে বিশেষ বাহিনী গঠন করেছে।