ইউরোপ অধ্যায় শেষে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি দিচ্ছেন লিওনেল মেসি। খেলবেন মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মিয়ামির হয়ে। তবে আর্জেন্টাইন তারকার জন্য দুঃখের বিষয়, লিগে ক্লাবটির অবস্থান একেবারে তলানিতে।
গত কয়েক মাসে মেসির দল বদল নিয়ে নাটকীয়তার শেষ ছিল না। গুঞ্জন ছিল, পিএসজি পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে পুরনো ডেরা বার্সেলোনায় ফিরতে পারেন আর্জেন্টাইন তারকা। আবার ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, মোটা অঙ্কের প্রস্তাবে সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলালকেই বেছে নিচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী। কিন্তু বুধবার (৭ জুন) সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেসি নিশ্চিত করেছেন তিনি যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে। খেলবেন ইন্টার মিয়ামির হয়ে।
তবে তার জন্য দুঃখের বিষয় মেজর লিগ সকারে মোটেও ভালো অবস্থানে নেই তার দল। ইস্টার্ন কনফারেন্সের টেবিলে ১৫ দলের মধ্যে মিয়ামি একেবারে তলানিতে। এমএলএস কাপের শিরোপার লড়াইয়ে থাকতে হলে তার দলকে ফিরতে হবে টেবিলের নয়ে।
মিয়ামির এমন করুণ অবস্থা নিয়ে আর্জেন্টাইন সতীর্থ সের্হিও আগুয়েরো মজা করেছেন মেসির সঙ্গে। ইএসপিএন আর্জেন্টিনাকে দেয়া সাক্ষাতকারে আগুয়েরো বলেন, ‘আমি মেসির সঙ্গে কথা বলেছি। ইস্টার্ন কনফারেন্স লিগে মিয়ামির অবস্থান নিয়ে তাকে আমি একটি বার্তা পাঠিয়েছি স্ক্রিনশটসহ। আমি বলেছি, তোমার দল তলানিতে! তোমাকে আট অথবা নয় নম্বর পজিশনে যেতে হবে।’
সতীর্থ থেকে দলের এমন অবস্থা জেনে হতাশার সুরে মেসি বলেন, ‘আমাদেরকে প্লে অফে যেতে হবে!’
১৬ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে মিয়ামির অবস্থান টেবিলে ১৫তম স্থানে। হাতে আছে এখনো ১৮ ম্যাচ। মেসি দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন ২১ জুলাই। ততদিনে লিগে মিয়ামির ম্যাচ থাকবে ১২টি। এ ম্যাচগুলোতে টেবিলের শীর্ষে পৌঁছে সাপোর্টার্স শিল্ডস জয় করে নেয়া একেবারেই অসম্ভব। তবে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে এমএলএস কাপের লড়াইয়ে থাকতে হলে তাদেরকে টেবিলের সেরা নয়ে ফিরতে হবে। আপাতত মেসির চ্যালেঞ্জ সেখানেই।
উল্লেখ্য, মেজর লিগ সকারে মোট ২৯ দল প্রতিযোগিতায় নামে। এর মধ্যে ২৬টি দল যুক্তরাষ্ট্রের আর বাকি ৩ দল কানাডার। ২৯ দলকে দু’টি গ্রুপে ভাগ করা হয়, ইস্টার্ন কনফারেন্স ও ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে। ইস্টার্ন কনফারেন্সে আছে ১৫টি দল। বাকি ১৪টি দল রয়েছে ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে। মেসির দল ইন্টার মিয়ামি ইস্টার্ন কনফারেন্সে।
মৌসুমে প্রতিটি দল ৩৪টি করে ম্যাচ খেলে। তার মধ্যে নিজেদের কনফারেন্সে থাকা প্রতিটি দল বাকি দলগুলির বিপক্ষে দু’টি (একটি হোম, একটি অ্যাওয়ে) করে ম্যাচ খেলবে। বাকি ম্যাচগুলি খেলবে অপর কনফারেন্সে থাকা দলের বিপক্ষে। তবে অন্য কনফারেন্সে থাকা দলের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলতে পারবে। অর্থাৎ, ইস্টার্ন কনফারেন্সে থাকা একটি দল নিজ গ্রুপে ২৮টি ম্যাচ খেলার পর বাকি ৬ ম্যাচ খেলবে অন্য গ্রুপের ৬ দলের বিপক্ষে। আর ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের দলগুলো নিজ গ্রুপে ২৬ ম্যাচ খেলার পর বাকি ৮ ম্যাচ খেলবে অন্য কনফারেন্সের ৮ দলের বিপক্ষে। লিগ শেষে শীর্ষে থাকা দলকে ‘সাপোর্টার্স শিল্ড’ পুরস্কার দেয়া হয়।
আর লিগের প্রথম ১৮টি দলের মধ্যে ‘মেজর সকার লিগ কাপ প্লে-অফ’ খেলা হয়। সেই প্রতিযোগিতা যে দল জেতে সেই দল ‘সাপোর্টার্স শিল্ড’ জেতা দলের বিপক্ষে ‘মেজর সকার লিগ কাপ’ খেলে। এ ম্যাচের জয়ী দলকে লিগের চ্যাম্পিয়ন ধরা হয়।