বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে বেকারত্ব বেড়ে গেছে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এপ্রিলে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ২০.৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৩০ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে দফায় দফায় বিধিনিষেধের মধ্যে থাকায় চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে। ফলে দেশটির প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। এমন পরিস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে চীন।
চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। অর্থনীতি চাকা ফের ঘুরতে শুরু করলেও দেশটিতে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে বেকারত্ব।
সরকারি পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, চীনে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার গত এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছুঁয়েছে। এ মাসে বেকারত্বের হার ছিল ২০.৪ শতাংশ। দেশটিতে নতুন করে ১ কোটি ১৬ লাখ শিক্ষার্থী কলেজ ও ভোকেশনাল স্কুল থেকে স্নাতক শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হওয়ার মাত্র এক মাস আগে এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হলো।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ন্যান্সি কিয়ান বলেন, চীন সরকারের শূন্য-কোভিড নীতির অধীন লকডাউন আরোপ করায় অন্যান্য দেশের নিয়ন্ত্রণ নীতির তুলনায় দেশটি অর্থনৈতিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
২০২১ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, চীনের সাংহাই ও বেইজিংয়ের মতো বড় শহরে সদ্য স্নাতকদের জন্য চাকরিতে প্রতি মাসে গড়ে মাত্র ৭৪৯ মার্কিন ডলার দেয়া হয়। এসব শহরে এ অর্থ শুধু ২৬৯ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়। এসব চাকরি করে পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে চীন অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে থাকার কথা জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। ২০২০ সালে করোনা মহামারি যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল, তখন মার্কিন তরুণদের কর্মসংস্থানের হার ১৪.৮৫ শতাংশে পৌঁছেছিল। আর ২০২১ সালে তা ৯.৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের কর্মসংস্থানের হার ৬.৫।
চীনে কর্মসংস্থানে মহামারি সংক্রান্ত অধিকাংশ বাধা এখন তুলে নেয়া হয়েছে। এরপরও দেশটিতে তরুণদের কর্মসংস্থানের হার কমার কোনো মৌলিক উন্নতি হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে কেবল চাকরি নয়; বরং এখন উচ্চ বেতনের চাকরিরও প্রয়োজন।