রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের মধ্য দিয়ে নামল আইপিএলের ষোলোতম আসরের পর্দা। শেষ দুই বলে চার ছয়ে ধোনির দলকে পঞ্চম শিরোপা এনে দিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। টানটান উত্তেজনায় পরিপূর্ণ একটা আসর শেষে প্রশ্ন উঠেছে জোরেশোরে – এটাই কি আইপিএলের ইতিহাসের সেরা আসর? শুধু খেলার কারণেই নয়, আর্থিক দিক থেকেও আইপিএলের ষোলোতম আসর বহুদিন থাকবে আলোচনায়।
করোনা মহামারির কারণে গত কয়েকবছরের আইপিএল অনুষ্ঠিত হয়েছে নানা বাধানিষেধ মেনে। অবশেষে চার বছর পর আইপিএল এবার ফিরেছে হোম ও অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে। যা বাড়িয়েছে মাঠের দর্শকদের উন্মাদনা। হোম ভেন্যুতে খেলার সুযোগ পেয়ে দলগুলোও রাখেনি চেষ্টার কমতি। দারুণ জমজমাট ক্রিকেট দেখা গেছে বেশিরভাগ ম্যাচেই।
আইপিএলের এবারের আসর ছিল ঘটনায় পরিপূর্ণ। আগের দুই আসরে বিবর্ণ বিরাট কোহলি ফিরেছেন সেরা ছন্দে। ফাফ ডু প্লেসি বয়সকে জয় করে দেখিয়েছেন অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা। শুভমান গিলের অবিশ্বাস্য ফর্ম, সেই সঙ্গে যশস্বী জয়সওয়াল, আকাশ মাধওয়াল, তিলক ভার্মাদের উত্থান, রিঙ্কু সিংয়ের শেষ পাঁচবলে পাঁচ ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানো ও শিরোপা জিতে ধোনির সম্ভাব্য শেষ আইপিএল রাঙানো – আইপিএল ছিল কোনো দক্ষ চিত্রনাট্যকারের লেখা স্ক্রিপ্টে দারুণ এক চলচ্চিত্র, যা দেখে দর্শক তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে ঘরে ফিরেছেন।
বড় চমক ছিল আইপিএলের প্রাইজমানি তথা পুরস্কারেও। এবারের আইপিএলে প্রাইজমানিও দেয়া হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। আইপিএলের ষোলোতম আসরে ৬০ কোটি ৩১ লাখ টাকার বেশি আর্থিক পুরস্কার দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। যা গত বছর অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাইজমানির চেয়েও বেশি। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে মোট ৬০ কোটি সাড়ে ৩ লাখ টাকার আর্থিক পুরস্কার দিয়েছিল আইসিসি।
আইপিএল জিতে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস পেয়েছে ২৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ও রানার্সআপ গুজরাট টাইটান্স পেয়েছে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তৃতীয় ও চতুর্থ হওয়া মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও লখনৌ সুপার জায়ান্টসও পেয়েছে যথাক্রমে ৯ কোটি ৭ লাখ ও ৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
ব্যক্তিগত পুরস্কারের অর্থমূল্যও কম ছিল না। টুর্নামেন্টসেরা হয়ে গুজরাটের শুভমান গিল পেয়েছেন ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ও সেরা গেমচেঞ্জার হিসেবেও সমান হারে অর্থ গেছে গিলের পকেটে। ও হ্যাঁ, গিলের অর্থযোগ ঘটেছে আরও। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ চার হাঁকিয়েও ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা পেয়েছেন গিল।
সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মোহাম্মদ শামি, সেরা উদীয়মান যশস্বী জয়সওয়াল, সবচেয়ে বেশি ও সবচেয়ে বড় ছক্কা হাঁকিয়ে ফাফ ডু প্লেসি, ও মৌসুমসেরা ক্যাচের জন্য রশিদ খানও গিলের মতো ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা করে অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। বড় দান মেরেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সুপার স্ট্রাইকার হিসেবে বাকিদের সমান অর্থ তো পেয়েছেন-ই, বোনাস হিসেবে পেয়েছেন গাড়িও। আর সেরা পিচের জন্য ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা করে পেয়েছে ওয়াংখেড়ে ও ইডেন গার্ডেনস।