Homeশীর্ষ সংবাদডুবুরি না থাকায় বরগুনায় বাড়ছে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার

ডুবুরি না থাকায় বরগুনায় বাড়ছে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার

বরগুনায় নেই ডুবুরি ইউনিট। এতে দুর্ঘটনায় ব্যাহত হয় উদ্ধার অভিযান। পানিতে ডুবে যাওয়া কাউকে সম্ভব হয় না জীবিত উদ্ধার করা। তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু না হওয়ায় অনেক সময় মরদেহ উদ্ধারেও বেগ পেতে হয়। বিষয়টি স্বীকার করে বরগুনায় ডুবুরি ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরগুনায় অন্তত ৩০০ কিলোমিটার নৌপথ রয়েছে। এতে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি প্রতিদিন হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দারা চলাচল করেন। এছাড়া জেলায় জেলে রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার। নদী কেন্দ্রিক জীবন-জীবিকার পাশাপাশি নৌপথে চলাফেরার কারণে জেলায় প্রায়ই পানিতে ডুবে নিখোঁজের ঘটনা ঘটে । এছাড়া খাল, বিল এবং পুকুরে ডুবে যাওয়ার ঘটনা তো রয়েছেই।

এসব ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ভুক্তভোগীদের জীবিত উদ্ধারে দরকার পড়ে ডুবুরি। কিন্তু বরগুনায় কোনো ডুবুরি ইউনিট না থাকায় বরিশাল থেকে ডুবুরি আনতে হয়। ফলে ডুবুরি আসতে আসতে পানির মধ্যে প্রাণ হারান ভুক্তভোগীরা। এছাড়া ডুবুরির অভাবে যথাসময়ে উদ্ধার অভিযান শুরু না হওয়ায় বেগ পেতে হয় মরদেহ উদ্ধারেও।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরে বরগুনায় পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে দুই শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দার।

বরগুনা পৌর সভার চরকলোনী এলাকার বাসিন্দা সুজন বলেন, ‘দুদিন আগে আমাদের এখানে খালের পানিতে ডুবে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। ডুবুরি থাকলে এ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা যেত।

আমতলী লঞ্চ ঘাট এলাকার বাসিন্দা মাহমুদ বলেন, ‘গোসল করতে নেমে পায়রা নদীতে একটি ছেলে নিখোঁজ হয়েছিল। উদ্ধার করতে বরিশাল থেকে ডুবুরি আসতে আসতে ছেলেটিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মরদেহ উদ্ধার করতেও বেগ পেতে হয়েছে।

বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ‘বরগুনায় প্রতিবছর অনেক মানুষ পানিতে ডুবে মারা যান। সংখ্যাটা নেহায়েত কম নয়। এ বিষয়ে আমরা নানাভাবে সচেতন করেও কাঙ্ক্ষিত সফলতা পাইনি। নদীবহুল জেলা হওয়ায় এমনটা ঘটছে। এক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। এছাড়া পানিতে কেউ ডুবে গেলে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করার সক্ষমতাও দরকার।

বরগুনার ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শামীম রেজা বলেন, ‘বরগুনার ছয় উপজেলায় ছয়টি ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থাকলেও এর একটিতেও ডুবুরি ইউনিট নেই। জেলার কোথাও পানিতে নিখোঁজের ঘটনা ঘটলে বরিশাল থেকে ডুবুরি আনতে হয়। এতে ভুক্তভোগীকে আর জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয় না‌। এছাড়া নদীতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। তখনও তাৎক্ষণিক ডুবুরির প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাতের কাছে ডুবুরি না থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। বরগুনায় একটি পূর্ণাঙ্গ ডুবুরি ইউনিট প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘বরগুনায় যে ডুবুরি ইউনিট নেই এটি আমার জানা ছিল না। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলব। বরগুনায় যাতে খুব শিগগিরই একটি ডুবুরি ইউনিট স্থাপন করা যায় সে বিষয়ে আমি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

সর্বশেষ খবর