শাহ মোঃ আ: মোমেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা অসচ্ছল ও দরিদ্র রোগীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হলেও শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্হ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্বাস্হ্যসেবা নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার রোগীরা। চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না পেয়ে তারা ছুটছেন আশপাশের ক্লিনিকগুলোতে।গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রসূতি মায়েদের। এখানে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে তারা ছুটছেন জেলা সদর কুড়িগ্রাম অথবা জামালপুর শেরপুর ,ময়মনসিংহ জেলায়।এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় আবার অর্থও ব্যয় বেশি হয়,সময়ও লাগে বেশি। অনেক সময় নৌপথে প্রসুতী মা ও সন্তানের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয়।এখানে যদি সিজারিয়ানের ব্যবস্থা করা হয় সব দিকেই ভালো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর থেকেই কার্ডিওলজি, শিশুরোগ, সার্জারি, চক্ষুবিদ্যা, গাইনি, স্কিন এলডিডি, অর্থোপেডিক, মেডিসিন, সার্জারি, ইএনটি ও অ্যানেসথেশিয়া—এই ২৫টি পদের বিপরীতে ২৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু শুধু অ্যানেসথেশিয়া পদে একজন চিকিৎসক থাকলেও শূন্য রয়েছেন ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ। একইভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১৬ জন মেডিক্যাল অফিসারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫ জন, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সাত জনের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন পাঁচ জন, ৩২ জন নার্সের স্থলে কর্মরত আছেন ৩২ জন, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ সর্বমোট ৯৩ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর স্থলে কর্মরত আছেন ৬৮ জন, ১৯ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর স্থলে কর্মরত আছেন ১০ জন। এতে সর্বমোট ১৮৬টি পদের মধ্যে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সাত জন মেডিক্যাল অফিসারসহ ৫৭টি পদেই শূন্য রয়েছে।
এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য বিভাগেও জনবলের ঘাটতি রয়েছে। নৈশপ্রহরীর দুই জনের এক জনও নেই। পাঁচ জন সুইপার পদে রয়েছেন ৩ জন। ওয়ার্ডবয়ের ৩ পদে দুই জন, পিয়নের ৬ পদে ১ জন, মশালচির দুই পদে এক জন রয়েছেন। সুপারভাইজারের ১জন।পদই শূন্য রয়েছে।রোগ নির্ণয় করার যন্তপাতিরও ঘাটতি রয়েছে।আবার যন্ত্র আছে কিন্তু টেকনিশিয়ান নাই।এম্বুল্যান্স ২টি চালু আছে একটি। নিজস্ব জেনারেটর আছে, তবে চালু করা হয়নি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণকমিটির সভাপতি খন্দকার শামসুল আলম বলেন, কুড়িগ্রাম জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন এই জনপথের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম বলেন, জনবল সংকটের কারণে দরিদ্র এই জনপথের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে দ্রুত জনবল দেওয়ার জন্য দাবী জানাই।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান বলেন,বিশেষজ্ঞচিকিৎসক হলো হাসপাতালের
প্রাণ। এখানে পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা সঠিক পরামর্শ নিতে পারছেন না। আমি এখানে নবাগত।আমি ৫০ শয্যার অনুমোদিত হাসপাতালের জনবল সংকট নিরসনে উদ্ধ্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিয়েছি।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা: মো: মন্জুর-এ- মুর্শেদ বলেন,রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১৪টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসকের শূন্যতা রয়েছে,তা পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।