পেঁয়াজের অস্থির বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নিয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। মজুতদার ও আড়তদাররা লাভবান হলেও নিত্যপণ্যটির ঊর্ধ্বমুখী দামে চাষিরা বাড়তি কোনো সুবিধা পাননি।
পেঁয়াজের ভরা মৌসুম ও সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও কোরবানির ঈদের আগে দেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমদানির তোড়জোড়ে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি সাতক্ষীরার খুচরা বাজারে।
দুই মাস আগেও যে পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, সেটি বর্তমানে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
নিত্যপণ্যটির ঊর্ধ্বমুখী দামে বিপাকে পড়া এক ক্রেতা বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বেশ কষ্ট হচ্ছে। জিনিসপত্রের যেভাবে দাম বাড়ছে, এভাবে দফায় দফায় বাড়ায় আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে।’
পেঁয়াজের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে চলে যাওয়ায় দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারা সংরক্ষণ করেনি, তাদেরটা মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে চলে গেছে, তারা তো আর লাভ পাবে না। ৭৫ ভাগ কৃষকই উৎপাদনকালে পেঁয়াজ বিক্রি করে দেয়। আর বাকি ২৫ ভাগ সাধ্যমতো যতটুকু পারে সংরক্ষণ করে।’
এ অবস্থায় খোদ ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি না হলে পেঁয়াজের দর কমবে না। এক ব্যবসায়ী বলেন, মাত্র এক মাস আগেই পেঁয়াজের দর ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, যা দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৬২ টাকা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পেঁয়াজ আমদানি হলে দেশের বাজারে দাম নিম্নমুখী হবে।
তবে বাজারে কঠোর নজরদারি চালিয়ে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলেই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করেন সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহসভাপতি এনছার বাহার বুলবুল। তিনি বলেন, মূলত মধ্যস্বত্বভোগীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারাই প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছে। তারা বাস্তবিকে কৃষকের কাছ থেকে কেজিপ্রতি কিনেছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ টাকায়। সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং করলে আশা করা যায়, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, ৭৫ শতাংশ চাষি পেঁয়াজ বিক্রি করে দিলেও ঈদুল আজহার আগে আড়তদারদের বাড়তি মজুতের কারণে অস্থির পেঁয়াজের বাজার।