আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন উৎপাদনে ভ্যাট বসছে। একই সঙ্গে হ্যান্ডসেট সংযোজনেও ভ্যাট হার বাড়ছে। ফলে খুচরা পর্যায়ে মোবাইল ফোনের দাম বাড়বে।
দেশে মোবাইল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে ২০১৮ সালে বাজেটে বড় ধরনের শুল্কছাড় দেয় সরকার। হ্যান্ডসেট আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্কের বিপরীতে দেশে উৎপাদন কিংবা সংযোজনে প্রায় ১৬ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। আর এই শুল্ক সুবিধার সুযোগ নিয়ে দেশে মোবাইল উৎপাদন করছে স্যামসাং, টেকনো, ভিভোসহ ১৪টি প্রতিষ্ঠান, যা দেশের চাহিদার ৯৫ ভাগ মেটাচ্ছে।
তবে যাত্রা শুরুর চার বছরের মাথায় চলতি অর্থবছরে ব্যবসায়িক পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। উৎপাদক, ডিলার ও খুচরা–এই তিন স্তরে যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ শতাংশ। এতে প্রতিটি হ্যান্ডসেটে দাম বেড়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা।
সেই রেশ না কাটতেই এবার প্রথম হ্যান্ডসেট উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট বসাচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে সংযোজনে দুই ক্যাটাগরিতে বসতে পারে সাড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ ভ্যাট।
এ বিষয়ে ট্রানশান বাংলাদেশ লিমিডেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজোয়ানুল হক বলেন, ‘যদি কাস্টমস ডিউটি ও ভ্যাট মিলিয়ে ১০ শতাংশ বাড়ে, তাহলে আমাদের ওপর প্রচণ্ড পরিমাণে প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানিয়েছি, আমাদের মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী সাড়ে চার কোটি। অথচ ফোরজি নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ব্যবহারের জন্য অন্তত আট কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী দরকার। এ অবস্থায় এনবিআরের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে দুশ্চিন্তায় মোবাইল অপারেটররা।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘যদি হ্যান্ডসেটের ওপর ট্যাক্স বাড়ে, অবশ্যই মানুষ কিন্তু দামি ফোন বা স্মার্টফোন কিনতে দ্বিধাবোধ করবে। যদি আমরা ফোরজি করে থাকি, কিন্তু সে পরিমাণ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী না থাকেন, তাহলে দেখা যাবে আমাদের বিনিয়োগেরও কার্যকর ব্যবহার হবে না।’
বর্তমানে ব্রডব্যান্ডে ৪০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ কিনতে প্রতি এমবিতে বড় আইএসপিগুলোর খরচ হয় ১৮০ টাকা। অথচ ছোট সেবাদাতাদের ক্ষেত্রে তা ৩০০ টাকা। কাজেই ইন্টারনেটের দাম কমাতে এই বৈষম্য দূর করার দাবি করছে আইএসপিগুলো। এ ছাড়া ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেটে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমানোর সম্ভাবনা দেখছেন না সেবাদাতারা।
এ ক্ষেত্রে সব এক রেট করার দাবি জানিয়েছেন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক।
এদিকে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘আমাদের মোবাইল উৎপাদকদের ছোটখাটো সমস্যা আছে। আর আমি অতন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই সমস্যাগুলো বিবেচনা করি।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনের বাজার প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার।