রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ইউক্রেনের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ভেসেভোলোদ নিয়াজিভকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৭ লাখ ডলার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে তদন্তের পর মঙ্গলবার (১৬ মে) তাকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা একটা বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আটক করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সরকারের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।
ইউক্রেনের দুর্নীতিবিরোধী স্পেশালাইজড অ্যান্টি-করাপশন প্রসিকিউটর’স অফিসের (এসএপিও) একজন প্রসিকিউটর ওলেক্সান্ডার ওমেলচেঙ্কো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ বিচারককে সন্দেহজনক ঘুষ প্রকল্পের অংশ হিসাবে আটক করা হয়েছে।
ওমেলচেঙ্কো জানান, তদন্তের অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ভেসেভোলোদ নিয়াজিভসহ দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে অপরজনের পরিচয় প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। ওমেলচেঙ্কো আরও বলেন, অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর আগে সোমবার (১৫ মে) দুর্নীতিবিরোধী দুটি সংস্থা ন্যাশনাল অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো (এনএবিইউ) ও স্পেশালাইসড অ্যান্টি-কোরাপশন প্রসেকিউটর্স অফিস (এসএপি) সুপ্রিম কোর্টে তল্লাশি চালায়। এরপর ইউক্রেনের সুপ্রিম কোর্টে বিরাট দুর্নীতি হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানায় তারা।
দুর্নীতি দমন কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের ধনকুবের কোস্টিয়ানটিন জেভাগো আদালতের কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। একটা আইন সংস্থা তার মধ্যস্থতাকারী কাজ করে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জেভাগো আইনজীবীদেরকে ২৭ লাখ ডলার স্থানান্তর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ লাখ ডলার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ও আরও ৯ লাখ ডলার আইনজীবীদেরকে ‘মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করার জন্য’ প্রদান করা হয়।
এর আগে ২০২১ সালেও ঘুষকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। প্রায় তিন কোটি ডলার ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। অন্য বেশ কয়েকজন বিচারপতিও সেই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ আসে।
দুর্নীতিতে রীতিমতো নাজেহাল ইউক্রেন। ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্ষমতায় আসার পর দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতই এবার সেই দুর্নীতির জালেই জড়িয়ে পড়েছে এবং এমন এক সময় তা সামনে এলো যখন ইউক্রেনে যখন যুদ্ধ চলছে।