পাকিস্তানের রাজনীতিতে ইমরান খান নিঃসন্দেহে সবচেয়ে আলোচিত নাম এখন। কিছুদিন আগ পর্যন্তও ইমরান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করছিলেন নিয়মিত। তবে সম্প্রতি তিন এবং তার দলের নেতারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সুর করেছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং জিও নিউজের পৃথক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান বলেছেন, কিছু লোক তার ব্যাপারে পাকিস্তানের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সেনাপ্রধানকে একটি বার্তাও পাঠিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১২ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে বিদেশি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কখনোই জেনারেল অসিম মুনিরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্য দেননি। পিটিআই ক্ষমতায় এলে তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন।
ইমরান খানের এমন বক্তব্যের পরও খুব বেশি আস্থায় আসেননি জেনারেল অসিম মুনির। তিনি মঙ্গলবার (১৬ মে) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্পস কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে সেনা আইনে ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর সেনা সদর দফতর এবং বিভিন্ন কর্পস কমান্ডারদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরকারীদের বিচার করার ঘোষণা দেন।
সেনাবাহিনীর এই ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সেনা আইনে হামলাকারীদের বিচারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
এরই মধ্যে, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতা ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেছেন, যারা সেনা সদর দফতর এবং কর্পস কমান্ডারদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল তারা তার দলের কেউ নন। বরং তারা বাইরে থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী। তিনি ঘটনার নিন্দা করে তাদের বিচার দাবি করেছেন।
ফাওয়াদ চৌধুরী মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘ঘটনাগুলো লজ্জাজনক। এ বিষয়ে তদন্ত করা উচিত এবং জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত। তারা যেই হোক না কেন। এমনকি পিটিআইয়ের হলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।’
ইমরান খানের বক্তব্য এবং ফাওয়াদ চৌধুরী বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, তারা কেউই সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানকে চাটাতে চাচ্ছেন না। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ইমরান এবং তার দল হয়তো সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় যেতে চাচ্ছেন।