ডিবি পুলিশ সেজে এক প্রবাসীর ১৭ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তপু চন্দ্র ঘোষসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ মে) রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্তে তপু চন্দ্র ঘোষসহ তার সহযোগীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তের পর আসামিদের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে শনিবার রাতে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা তপু ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা দিনের বেলা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সৌদিপ্রবাসীর টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
তপু চন্দ্র ঘোষ সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের অর্জুনদি গ্রামের সাধন চন্দ্র ঘোষের ছেলে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মোগরাপাড়ায় ‘লন্ডন জুস বার অ্যান্ড ক্যাফ’ নামে তপুর একটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে৷ গত মাসে তিনি দোকানটির কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গ্রেফতার অপর তিন আসামি হলেন: সোনারগাঁ উপজেলার ছোট অর্জুনদি গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে রোহান (২১), একই উপজেলার বড়নগর এলাকার শুভঙ্কর চন্দ্র রাজবংশীর ছেলে কৃষ্ণচন্দ্র রাজবংশী (৩২), বগুড়া জেলার শেরপুরের খাজা আশ্রমপাড়া এলাকার চান শেখ মিয়ার ছেলে এরশাদ (২৪)। গ্রেফতারের পর এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন ওই আসামিরা।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুমোদিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকায় ১৭টি সহসভাপতি পদের মধ্যে তপু চন্দ্র ঘোষের নাম ১১ জনের পরে রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের হাজি সাহেবের মোড় এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন উজ্জ্বল হোসেন নামে এক সৌদিপ্রবাসী। ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আসামিরা তার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। দুদিন পর বন্দর থানায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই সৌদিপ্রবাসী৷
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ। তাকে নিয়ে আমি হাসপাতালে আছি। এখন কথা বলতে পারছি না। এ ব্যাপারে অনেক সাংবাদিক আমাকে ফোন করছে। আপনি আমাদের জেলা কমিটির সেক্রেটারি রাফেল ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।’
পরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের কেউ অপরাধ করলে আমরা কাউকে ছাড় দিই না। এর আগে অনেককেই বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তপু চন্দ্র ঘোষের অপরাধ প্রমাণ হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে বিষয়টি জানাব।’