ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাদের দেয়া অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলায় ব্যবহৃত হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো, জেলেনস্কি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। পেন্টাগনের ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা নথির বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার বিষয়ে জেলেনস্কি তার সহযোগী এবং ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেলদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। প্রতিবেদন অনুসারে, জেলেনস্কি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে রাশিয়ার বেশকিছু গ্রাম দখল করার পরিকল্পনা করেছিলেন, যাতে আলোচনার সময় দরকষাকষিতে তা কাজে লাগে।
এছাড়া জেলেনস্কি রাশিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে তেল সরবরাহের পাইপলাইনেও হামলা চালানোর কথা ভেবেছিলেন। পাশাপাশি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরেও হামলা চালানোর কথা বিবেচনা করেছিলেন তিনি।
পেন্টাগন থেকে ফাঁস হওয়া ‘টপ সিক্রেট লেখা’ নথি থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে এক বৈঠকে জেলেনস্কি ইউক্রেনের স্থল সেনাদের শত্রু অঞ্চলে বিশেষ করে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহরগুলো দখল করতে রাশিয়ায় হামলা চালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।
জেলেনস্কির মতে, এসব শহরে হামলা চালিয়ে তা দখলে নিতে পারলে তা মস্কোর সঙ্গে আলোচনার সময় কিয়েভকে অতিরিক্ত সুবিধার পাশাপাশি দর কষাকষির সুযোগ দিতো।
পরে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকের ইউক্রেনের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনির সঙ্গে এক পৃথক বৈঠকে জেলেনস্কি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, ইউক্রেনের কাছে রাশিয়ার অভ্যন্তর রুশ সেনা ঘাঁটি পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নেই বা তাদের আক্রমণ করার মতো কিছু নেই। তবে সে সময় জেলেনস্কি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ইউক্রেন পশ্চিম রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে।
ফেব্রুয়ারি মাসে উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভ্রোদনকোর সঙ্গে এক বৈঠকে জেলেনস্কি রাশিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে জ্বালানি তেল নিয়ে যাওয়া দ্রুজবা পাইপলাইনকে ‘উড়িয়ে’ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। জেলেনস্কি পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন যে, ‘ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠা হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের শিল্প ধ্বংস করে দেয়া উচিত এবং তেল নিয়ে যাওয়া পাইপলাইন উড়িয়ে দেওয়া উচিত।’
সেই বৈঠকের পর থেকে দ্রুজবা পাইপলাইনে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে আক্রমণ হয়েছে। সর্বশেষ আক্রমণ হয়েছে গত বুধবার (১০ মে)। সে সময় পাইপলাইনটির ওপর ড্রোন থেকে বিস্ফোরক ফেলা হয়েছিল।