রাশিয়ার ভূখণ্ডে আক্রমণের কোনো পরিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (১৪ মে) ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবার জার্মানি সফরে গিয়ে দেশটির চ্যান্সেলরের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিবিসির।
রোববার বার্লিনে পৌঁছানোর পর বিউগলের সুর আর ড্রামের তালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বাগত জানান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ ও প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার। পরে যুদ্ধরত ইউক্রেনের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ওলাফ শলজের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন জেলেনস্কি।
বৈঠকে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিয়েভকে আরও কামান, গোলাবারুদ, শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ লিওপার্ড ট্যাংক, ভিন্ন মডেলের সাঁজোয়াযান ও ভারী অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন চ্যান্সেলর শলজ।
এ সময় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানতে যাচ্ছি না। বরং আমরা অবৈধভাবে দখল করা অঞ্চলগুলো তাদের দখলমুক্ত করতে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
জেলেনস্কি ইউক্রেন ছেড়ে আসা তার দেশের লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় জার্মানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে বার্লিনের কাছ থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়ে চ্যান্সেলর শলজকে ধন্যবাদ জানান।
জেলেনস্কির জার্মানি সফরের আগেই কিয়েভকে ৩০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেয় বার্লিন।
গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবার জার্মানি সফরে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এর আগে, রোমে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিও মেলোনি ও ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসকোর সঙ্গে সাক্ষাত করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাদের দেয়া অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলায় ব্যবহৃত হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো, জেলেনস্কি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।
পেন্টাগনের ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা নথির বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার বিষয়ে জেলেনস্কি তার সহযোগী এবং ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেলদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
জেলেনস্কি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে রাশিয়ার বেশকিছু গ্রাম দখল করার পরিকল্পনা করেছিলেন, যাতে আলোচনার সময় দরকষাকষিতে তা কাজে লাগে। এছাড়া জেলেনস্কি রাশিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে তেল সরবরাহের পাইপলাইনেও হামলা চালানোর কথা ভেবেছিলেন। পাশাপাশি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরেও হামলা চালানোর কথা বিবেচনা করেছিলেন তিনি।