Homeআন্তর্জাতিকএকদিনে চাকরি হারালেন ৩৬ হাজার শিক্ষক

একদিনে চাকরি হারালেন ৩৬ হাজার শিক্ষক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একদিনে চাকরি হারিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৬ হাজার শিক্ষক। শুক্রবার (১২ মে) শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির এক মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এক আদেশে তারা চাকরি হারিয়েছেন।

এর আগে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালে। নয় বছর আগের সেই টেটের পরীক্ষা এবং নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলে আদালতে মামলা করেন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারিসহ চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার গাইডলাইনে বলা হয়েছিল, প্রশিক্ষিতরা (বিএড, ডিএলএড পাশ) অগ্রাধিকার পাবেন। সেই হিসেবে ৪২ হাজার ৫০০ জন নিয়োগ পান। কিন্তু দেখা যায়, বহু প্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরি পাননি। মাত্র ৬ হাজার ৫০০ জন প্রশিক্ষিত এবং ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত চাকরি পান। অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেন ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী মন্ত্রী , শিক্ষা দপ্তরের আমলা এবং প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।

অভিযোগের আঙুল ওঠে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যসহ একাধিক সরকার ঘনিষ্ঠের বিরুদ্ধে। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই মামলার তদন্ত শুরু। এখনও পর্যন্ত এ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ১১ জন। উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। সেই মামলায় শুক্রবার আদালত অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে ৩৬ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়ে তার জন্য চাকরি হারানো ৩৬ হাজার শিক্ষক আগামী চার মাস স্কুলে যেতে পারবেন, পড়াতেও পারবেন। কিন্তু বেতন পাবেন পার্শ্বশিক্ষকদের পে স্কেলে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও এ ৩৬ হাজার শিক্ষক অংশ নিতে পারবেন না। কারণ নিয়োগের মৌলিক মানদণ্ডই তারা মানেননি। ফলে তাদের চাকরি হারাতে হবে।

এছাড়া নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার ক্ষেত্রে যদি সরকারের অর্থ সংকট থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রয়োজনে মূল অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যের থেকে আদায় করার কথাও বলেছেন বিচারপতি।

হাইকোর্টের এমন রায় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। একসঙ্গে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

তবে, কলকাতা হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি শুক্রবার হাইকোর্টের এমন রায়ের পর সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, চাকরি হারানোদের দায় অস্বীকার করতে পারে না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আগামী দিনে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান পর্ষদ সভাপতি।

Exit mobile version