দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। শনিবার (১৩ মে) সকালেই অতি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। গত ৬ ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার গতিতে এগোনো মোখার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
শনিবার সকালে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বরা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের সিত্তে বন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার, বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ৭৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে আরও জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে করতে এগিয়ে চলেছে মোখা। আরও ৩০ ঘণ্টা এগোনোর পর রোববার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ স্থলভূমিতে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, মিয়ানমারেই মোখার মূল প্রভাব পড়বে। তবে মোখা বয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় তার প্রভাব পড়তে পারে। তখন ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালিতে এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। এরইমধ্যে ঢাকা এবং ইয়াঙ্গুন প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং বিপর্যয় পরবর্তী প্রস্তুতি নিয়েছে।
শনিবার আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, মোখার প্রভাবে সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের জেলাগুলোর মৎস্যজীবীদের সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। রোববার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর।
এদিকে শনিবার পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ওই সময় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়াতেও। রোববার বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং নদিয়া জেলায়। উত্তরবঙ্গের সব জেলায় সোমবার (১৫ মে) থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মোখার আগাম সতর্কতা হিসেবে শনিবার সকাল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের উপকূল থানাগুলোতে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে।
সকাল থেকে কুলতলি থানার কৈখালী, মাতলা নদীতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পক্ষে মক ড্রিল হয়েছে। নদী উপকূল এলাকার গ্রামের বাসিন্দাদের সাবধান করা হচ্ছে। এরইমধ্যে কুলতলি ব্লক প্রশাসনের পক্ষে শুকনো খাবার, ত্রিপল মজুত করা হয়েছে। সুন্দরবনের প্রতিটি এলাকায় বিশেষ নজরদারি করছে প্রশাসন।