নিলামে উঠতে যাচ্ছে চীনের শেষ সম্রাট আইসিন-গিয়োরো পুইয়ের একটি হাতঘড়ি। সেটির দাম ধরা হয়েছে ৩ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩২ কোটি টাকারও বেশি।
মঙ্গলবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতঘড়িটি সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা প্যাটেক ফিলিপের তৈরি। এই মডেলের ঘড়ি বিশ্বে মাত্র ৮টি রয়েছে। তাছাড়া এই ঘড়ির সঙ্গে মিশে আছে ৮৬ বছরের ইতিহাস। সম্রাট পুয়ি যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে কারাবন্দি ছিলেন, তখন ঘড়িটি ছিল তার সঙ্গে।
চামড়ার বেল্টের এই ঘড়ির ডায়ালটি প্লাটিনামের তৈরি, যার ব্যাস ১ দশমিক ২ ইঞ্চি। কাঁটাগুলো তৈরি গোলাপি-সোনালি রঙের মিশেলে। ঘড়িটি চলতি মাসেই হংকংয়ে নিলামে তোলা হচ্ছে। নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ফিলিপস।
১৯০৮ সালে অল্প বয়সে চীনের সম্রাট হিসেবে ক্ষমতায় বসেন পুয়ি। মাত্র চার বছর পর এক বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তাকে। ১৯২৪ সালে বেইজিং থেকে পালিয়ে তিনি জাপানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। পরে জাপানের পুতুলরাষ্ট্র মাঞ্চুকুয়ওর সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় পুয়িকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর তাকে গ্রেপ্তার করে সোভিয়েত বাহিনী। তাকে কারাগারে রাখা হয় যুদ্ধবন্দি হিসেবে।
কারাগারে পুয়ির সঙ্গে ছিলেন জর্জি পেরমিয়াকভ নামের এক ব্যক্তি। মান্দারিন ভাষায় দক্ষ পেরমিয়াকভ তার গৃহশিক্ষক ও দোভাষী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৫০ সালে ঘড়িটি পেরমিয়াকভকে দিয়ে দেন তিনি। এর পরপরই যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য পুয়িকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে চীনে নেওয়া হয়। তার বাকি জীবনটা চীনেই কেটেছিল।
এদিকে ২০০৫ সালে মারা যান পেরমিয়াকভ। এর আগ পর্যন্ত ঘড়িটি তার কাছেই ছিল। এরপর সেটি পেরমিয়াকভের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের কাছে যায়। শেষে ২০১৯ সালে ঘড়িটি নিলামকারী ফিলিপসের হাতে পড়ে। ঘড়িটি এরই মধ্যে নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও তাইপেতে প্রদর্শন করা হয়েছে। ২৩ মে হংকংয়ে নিলামে তোলার আগে সেটি জেনেভায়ও প্রদর্শন করা হবে।