আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পাকিস্তানের হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে ইমরান খানই একমাত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী নন যাকে গ্রেফতার হয়েছেন। তার মত পাকিস্তানের ইতিহাসে আরও কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন যারাও গ্রেফতার হয়েছিলেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মঙ্গলবার তার গ্রেফতারের পর পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। তবে ইমরান খানই প্রথম নন, এর আগেও বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার হন।
পাকিস্তানের প্রথম গ্রেফতার হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৬২ সালে তৎকালীন সেনাশাসক আয়ুব খানের ইলেকটিভ বডিস ডিসকোয়ালিফিকেশন অর্ডার বা এবডো অমান্য করার অভিযোগ তুলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হয়। রাখা হয় করাচি কারাগারে নির্জন কক্ষে। পরে তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ অভিযোগও আনা হয়।
জুলফিকার আলী ভুট্টো, পাকিস্তানের নবম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৪ সালে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। ১৯৭৯ সালের ৪ এপ্রিল তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকেও গ্রেফতার হতে হয়েছিলো। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল দুই মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৯০ দিনের জন্য গৃহবন্দি রাখা হয়।
পরের বছর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের আগস্টে আবারও গ্রেফতার হন বেনজির ভুট্টো। করাচিতে স্বাধীনতা দিবসের একটি সমাবেশে সরকারের তীব্র সমালোচনা করার জেরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে আবারও বেনজিরকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্নীতির মামলায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ২০০৭ সালে তৎকালীন সেনাশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে লংমার্চ করতে গেলে এক সপ্তাহের জন্য গ্রেফতার হন তিনি।
কারাগারে যেতে হয়েছে পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের আমলে তিনি টানা ১০ বছর বিদেশে নির্বাসিত ছিলেন। পাকিস্তানে ফিরে এলে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আবারও গ্রেফতার হন নওয়াজ। দুর্নীতির মামলায় মেয়ে মরিয়ম নওয়াজসহ তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের আদালত। একই বছরের ডিসেম্বরে আল-আজিজিয়া ইস্পাত কারখানার দুর্নীতির মামলায় নওয়াজের ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) দল থেকে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসীকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করা হয়। শহীদ খাকান আব্বাসী ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
সর্বশেষ এ বছরের ৯ মে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।