ইউরোপীয় অস্ত্র চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে রাশিয়া। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতার সঙ্গে সামরিক তথ্য আদান-প্রদানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত ট্রিটি অন কনভেনশনাল আর্মড ফোর্সেস ইন ইউরোপ (সিএফই) থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করতে একজন কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে নিয়োগও দিয়েছে দেশটি।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি ইন্টারন্যাশনালের খবর, রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই র্যাবকভকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সিএফই থেকে বের হয়ে আসার পুরো বিষয়টি তদারক করার দায়িত্ব দিয়েছেন।
বুধবার (১০ মে) ক্রেমলিনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের সময় র্যাবকভের নিয়োগের বিষয়টিও সামনে আসে। নতুন দায়িত্ব অনুসারে রাশিয়ার পার্লামেন্টে উভয় কক্ষেই র্যাবকভ চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণসহ যাবতীয় বিষয়াদি তদারকি করবেন।
রাশিয়ার জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল এলডিপিআর পার্টির নেতা লিওনিদ স্লাৎস্কি জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এ সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়ার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে একটি খসড়া উত্থাপন করা হবে।
১৯৯০-এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে থাকা ওয়ারশ সামরিক জোট এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে থাকা ন্যাটো জোটের মধ্যে উত্তেজনা কমাতেই এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এ চুক্তি অনুসারে, ইউরোপজুড়ে প্রথাগত সামরিক শক্তি মোতায়েনের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। এছাড়া, চুক্তিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সামরিক তথ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখাও ছিল চুক্তিটির অন্যতম শর্ত।
মস্কো দীর্ঘদিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে থাকা ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণের অভিযোগ করে আসছে। এমনকি জোটটি সাবেক ওয়ারশ সামরিক জোটের সদস্যদেরও নিজেদের সদস্য করে নিয়েছে। এ অবস্থায় চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালে রাশিয়া সিএফই আংশিকভাবে স্থগিত করে। রাশিয়া অভিযোগ করে, ন্যাটোর নতুন সদস্য দেশগুলো ন্যাটোতে যোগ দেয়ার মাধ্যমে সিএফই চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। পরে ২০১৫ সালে রাশিয়া সিএফই-এর শর্ত প্রতিপালন করা থেকে পরিপূর্ণভাবে বিরত থাকা শুরু করে।