ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বুধবার (১০ মে) স্থানীয় সময় রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেয়া ভাষণে ‘দেশের শত্রুদের’ কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এদিকে ইমরান খানের সমর্থকরা লাহোরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং জিও নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১৪৪ ধারা জারি করেও থামানো যাচ্ছে না পিটিআই নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। সব বাধা উপেক্ষা করে ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বুধবার আবারও রাস্তায় নামেন তারা। এ সময় পুলিশ বিক্ষুব্ধদের ওপর চড়াও হয়। ব্যবহার করা হয় টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট। দুদিনের বিক্ষোভ-সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৯০ জন।
আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেও, তাদের ওপর অন্যায়ভাবে পুলিশ হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এক পিটিআই নেতা। একইসঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ওপর রাতে পুলিশের একের পর এক গুলির একটি ভিডিও টুইটারে প্রকাশ করেছেন তিনি।
এদিকে ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর থেকে তার সমর্থকরা সেনাবাহিনী সদর দফতর থেকে শুরু করে বিভিন্ন কার্যালয়ে হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে ইতিহাসের কালো অধ্যায় বলে বর্ণনা করে হামলাকারীদের কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে ইসলামাবাদসহ পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
এরই মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। একইসঙ্গে যারা সহিংসতা করছে তাদের দেশের শত্রু আখ্যা দিয়ে কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘পিটিআই যা করছে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। একজন প্রকৃত নেতা কখনোই তার নেতাকর্মীদের আইন ভঙ্গের সুযোগ দেবে না। পিটিআই নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে যা করছে তা অবশ্যই ক্ষমার অযোগ্য। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এ হুঁশিয়ারির পরপরই লাহোরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পিটিআই সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার মধ্যরাতে বাসভবনের বাইরে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এছাড়া, বাসভবনের ভেতরে হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয় বলেও জানায় পুলিশ।
মঙ্গলবার দুটি মামলায় হাজিরা দিতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা শেষে আদালত থেকে বের হতেই রেঞ্জার্সের সদস্যদের বাধার মুখে পড়েন ইমরান খান। একপর্যায়ে আদালতের বাইরে থেকে আটক করা হয় তাকে। পরে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।