সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া চালাচ্ছে সুইজারল্যান্ড। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তায় ক্রমাগত অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকায় এ মহড়া চালানো হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধে সরাসরি ইউক্রেনকে সহায়তার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুইজারল্যান্ডের নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কমান্ডো কৌশলে শত্রুর সীমানায় ঢুকে পড়েছে সুইজারল্যান্ডের সেনাবাহিনী। ছোঁড়া হচ্ছে একের পর এক গ্রেনেড ও গোলা। এভাবেই ডামি বানিয়ে সুইজারল্যান্ডের সেনাবাহিনীর সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।
বিগত তিন দশকের মধ্য সবচেয়ে বড় এ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রায় চার হাজার সদস্য। এতে শত্রুর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলার পাশাপাশি আত্মরক্ষার নানা কৌশলও অনুশীলন করছেন তারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তায় ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই বিশাল এই সামরিক মহড়া শুরু করেছে সুইস সেনাবাহিনী। এরমধ্য দিয়ে সেনারা সম্মুখ যুদ্ধের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
সুইজারল্যান্ডের টেরিটোরিয়াল ডিভিশন-১ এর কমান্ডার ম্যাথিয়াস টুশার বলেন, ‘শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য আমাদের একটি দক্ষ সেনাবাহিনী আছে। এ বাহিনীর কাজ কারো ওপর আক্রমণ করা নয় বরং যেকোনো ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করতে আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটিই আমাদের সেনাবাহিনীর কাজ।’
জেনেভা ক্যান্টনের নিরাপত্তা, জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা স্টেট কাউন্সিলর মারিয়া পোগিয়া বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে এ মহড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যুদ্ধরত কোনো দেশে সামরিক সহায়তার বিষয়ে নাগরিকদের মতবিরোধ রয়েছে। তবে, নিপীড়িত মানুষের জন্য নিজেদের দরজা বন্ধ করে দেয়া কখনো ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারেনা।’
বরাবরই বিবদমান আন্তর্জাতিক ইস্যুতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে আসছে সুইজারল্যান্ড। এছাড়াও যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র বিক্রি এবং সামরিক সহায়তা করা দেশটির পররাষ্ট্র নীতিবিরুদ্ধ। তবে, চলমান প্রেক্ষাপটে নানামুখী আন্তর্জাতিক চাপে, এবার দেশটি নিজেদের ওই অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও এ বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত দেশটির নীতিনির্ধারকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুদ্ধে ইউক্রেনকে সরাসরি সহায়তা করলে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুইজারল্যান্ড।