ভারতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এ দাঙ্গায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৩১ জন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার (৩ মে) রাজ্যটির কুকি উপজাতির সঙ্গে স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেতাই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের কারণ, এখানকার মেতাই সম্প্রদায়কে আদিবাসী তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিগত ১০ বছর ধরে তারা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।
প্রতিবাদে মেতাইদের যাতে আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়া না হয়, তারই দাবিতে বুধবার (০৩ মে) রাজ্যটির চূড়াচাঁদপুর জেলায় মিছিল বের করে আদিবাসী ছাত্র সংগঠন এটিএসইউএম। তাদের দাবি, মেতাইদের তফসিলি স্বীকৃতি দিলে মণিপুরের প্রকৃত আদিবাসীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। পুলিশের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের দাবি, বুধবারের মিছিল থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর মণিপুরের বিভিন্ন জেলায় দুই জনগোষ্ঠীর মধ্য সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সেই সংঘর্ষ এখনো চলছে। এদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই দাঙ্গার পেছনে উসকানিদাতা হিসেবে কারা কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত ৬০ জন নিহত হয়েছে জানিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং এ সহিংসতায় অন্তত ২৩১ জন আহত হয়েছে। এছাড়াও, ৩ মে শুরু হওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় (দাঙ্গা) প্রায় ১ হাজার ৭০০ বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এ সময় তিনি রাজ্যবাসীর প্রতি শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, মণিপুরে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার লোক বাস্তুহারা হয়েছেন। এর পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীরা পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে ১ হাজার ৪১টি অস্ত্র এবং প্রায় ১ হাজার গুলি লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং নিজেই বিষয়টি জানিয়েছেন।