রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করেছে রাশিয়া। এ হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সোমবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
মূলত নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয় দিবস পালনের আগে ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার এ হামলার খবর সামনে এলো।
হামলার পর জাপোরিঝিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে অনেকে।
ইউক্রেনের সশস্ত্রবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছেন, হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও বড়বড় দালানসহ বিভিন্ন বড়িঘর ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া রাশিয়ার নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী ওডেসা শহরে একটি খাদ্যদ্রব্যের গুদামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এবং ইউক্রেনের অন্যান্য কয়েকটি অঞ্চলেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তারা কিয়েভের আশেপাশে বহুবার বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হামলা প্রতিহত করছে।
ওডেসার সামরিক প্রশাসনের মুখপাত্র সেরহি ব্রাচুক তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি বিশাল অবকাঠামোর ছবি পোস্ট করেছেন। ওই অবকাঠামোটি সম্পূর্ণরূপে আগুনে নিমজ্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই খাদ্য গুদামের পাশাপাশি অন্যান্য স্থাপনাতেও রাশিয়া আক্রমণ চালিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশজুড়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সতর্কতা জারি ছিল। এছাড়া খেরসনের দক্ষিণাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত জাপোরিঝিয়া অঞ্চলেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
জাপোরিঝিয়াতে রাশিয়ান-নিযুক্ত স্থানীয় কর্মকর্তা ভ্লাদিমির রোগভ বলেন, রাশিয়ান বাহিনী এ অঞ্চলের ছোট শহর ওরিখিভে একটি গুদাম এবং ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থানে আঘাত করেছে। রয়টার্স স্বাধীনভাবে এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি।
পৃথকভাবে রাশিয়ান বাহিনী রোববার উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে আটটি স্থানে গোলাবর্ষণ করেছে বলে আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে।
নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয় দিবস হিসেবে প্রতিবছর ৯ মে ‘ভিক্টরি ডে’ রাশিয়ায় ব্যাপকভাবে পালিত হয়। নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের বার্ষিকীকে চিহ্নিতকারী এই দিবসটি রাশিয়ার জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং দিবসের প্রাক্কালেই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে হামলার এ ঘটনা ঘটল।
মস্কো মঙ্গলবার (৯ মে) তার বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের এ বার্ষিকী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কারণে মঙ্গলবারের মধ্যে বাখমুতের দখল নিতে রুশ বাহিনী শহরটির দিকে গোলাবর্ষণ আরও তীব্রতর করেছে বলে অবরুদ্ধ শহরটির প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেল জানিয়েছেন।