গত কয়েকদিন ধরেই ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমে বেশ আলোচিত বিষয় লিওনেল মেসির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে। ক্লাবের অনুমতি না নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। নিষেধাজ্ঞার পরের গল্পটা তো আরও ভয়ংকর।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর মেসির বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হন পিএসজি সমর্থকরাও। দিন দুয়েক আগে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে মিছিল করে ক্লাবটির সমর্থকরা। সেখানে তাকে ‘ভাড়াটে’ বলেও উল্লেখ করে তারা। ঘটনার পর প্যারিসে মেসির বাসার নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ।
মেসির ঘটনার পর সাবেক-বর্তমান তারকারা এই বিষয়ে বিভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন। মেসি নিজেও গতকাল (৫ মে) এক ভিডিও বার্তায় ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তার কাজের জন্য। তবে এই ঘটনায় আরও ক্ষুব্ধ হয়েছেন ফ্রান্সের সাবেক তারকা জেরোম রোথেন।
মেসির ওপর অনেক দিন থেকেই ক্ষোভ রোথেনের। গত ফেব্রুয়ারিতে মেসিকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, সিকে দলে টেনে ভুল করেছে পিএসজি। পরের মাসে আবার বলেন, পিএসজির গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচে গায়েব হয়ে যান মেসি।
এককথায় বলা যায়, মেসির সমালোচনায় সবসময়ই মুখর থাকেন রোথেন। তাই আর্জেন্টাইন তারকার সমালোচনা করার এতবড় সুযোগ আর ছাড়তে পারেননি তিনি। সম্প্রতি ফরাসি সংবাদমাধ্যম আরএমসিতে তিনি বলেছেন, মেসিকে নিষিদ্ধ করে পিএসজি ঠিক কাজটাই করেছে। তার মতে, মেসির আচরণ পেশাগত দৃষ্টিকোণ থেকে একদমই ঠিক ছিল না।
মোনাকোর হয়ে ২০০৩-০৪ চ্যাম্পিয়নস লিগে রানার্সআপ হওয়া রোথেন ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন ১৩ ম্যাচ। বরাবরই মেসিবিরোধী মানসিকতা পোষণ করা এই সাবেক তারকা মেসির ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিও ঠিকভাবে নিতে পারতেন। তার মতে, ক্ষমা চাওয়াতেই সবকিছু মিটে যায় না।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সে ভুল করে তা স্বীকারও করেছে। অর্থাৎ পিএসজি তাকে শাস্তি দিয়ে ঠিক কাজটাই করেছে। কারণ, এটা পেশাগত অসদাচরণ। আমি (পিএসজির) কোচ নই, তবে আমার কাছে বিষয়টি সরল। জবাবটা মেসিই দিক। সে এখানে (পিএসজি) দুই বছর ধরে আছে, মাঠে তার খেলা কি ক্লাবের জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে? উত্তর হলো না। পিএসজি তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াবে না এবং সে চলে যাবে এটা জেনেই বলছি, আমার মনে হয় ফ্রান্সে চ্যাম্পিয়ন হতে পিএসজির মেসিকে প্রয়োজন নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক হলেও ক্ষমা চাওয়ায় তো পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না। মাঠে নিজের পারফরম্যান্স ও আচরণের জন্য সে কি একাধিকবার ক্ষমা চেয়েছে? তার ওপর যে টাকা ঢালা হয়েছে, সে জন্য কি ক্ষমা চেয়েছে? কিংবা ফরাসি ভাষায় কথা না বলার জন্য, ফরাসি কোনো সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার না দেওয়ার জন্য সে কি ক্ষমা চেয়েছে? কিংবা ভক্তদের কাছে?’
সতীর্থ এবং ক্লাবের কাছে ক্ষমা চাইলেও ভক্তদের কথা উল্লেখ ছিল না সেখানে। এটারও তীব্র সমালোচনা করেছেন রোথেন। তিনি বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার ভিডিওটি সে যত ভালোই বানাক, আমার কাছে ভালো লাগেনি। সে কোচ ও সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু ভক্তদের কাছে চায়নি। তার এমন ভাবমূর্তিই প্রকাশ পেয়েছে ভক্তদের কাছে। সে কেন বলল, এই সফর বাতিল করতে পারেনি। অর্থাৎ ক্ষমা চাইলেও সে ঠিকই অজুহাত দেখিয়েছে। তাহলে আপনার কাজটা কী? এমন কাণ্ড করে টাকা নেওয়া, নাকি মাঠে পিএসজির জন্য সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দেওয়া?’