রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন দ্বিগুণ করার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। মস্কো এবং কিয়েভ যেভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাতে দুই পক্ষের সেনাবাহিনীই গোলাবারুদের সংকটে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই আহ্বান জানান। খবর আল-জাজিরার।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু মঙ্গলবার (২ মে) দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্যাকটিক্যাল মিসাইল কর্পোরেশন তাদের চুক্তি পূরণ করছে। তবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে উচ্চমানের ও নির্ভুল লক্ষ্যমাত্রার অস্ত্রের উৎপাদন দ্বিগুণ করা প্রয়োজন।’
রাশিয়া উচ্চমানের ও নির্ভুল লক্ষ্যমাত্রার গোলাবারুদ কম ব্যবহার করছে কিনা সে বিষয়টি সামরিক বিশ্লেষকরা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন। কারণ, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছোট পরিসরে হতে দেখা যাচ্ছে।
বুধবার ( ৩ মে) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন সম্পর্কে শোইগুর মন্তব্য কিছু বিষয় স্পষ্ট করছে। তার মন্ত্রণালয় রুশ বাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে গোলাবারুদ মজুত রাখতে পারেনি এবং আসন্ন ইউক্রেনীয় পাল্টা আক্রমণের উদ্বেগের মধ্যে সক্রিয় অবস্থান দেখাতে পারেনি। সম্ভবত এই দাবিগুলো থেকে সরে আসার জন্যই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের কেন্দ্রস্থলে রসদ সরবরাহ সমস্যা রয়ে গেছে। আক্রমণাত্মক সাফল্য অর্জনের জন্য রাশিয়ার কাছে পর্যাপ্ত যুদ্ধাস্ত্র নেই বলেও ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়া তাদের প্রতিরক্ষা শিল্পকে গতিশীল করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে কিন্তু এটি এখনও যুদ্ধের সময়ের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া মঙ্গলবারও কিয়েভে আক্রমণ চালিয়েছে। বুধবার ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ছয় দিনের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আক্রমণ চালানো হয়েছে। তবে কিয়েভকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো সব রুশ ড্রোন ধ্বংস করেছে ইউক্রেনে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এসব হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে, শত্রুদের সব আক্রমণ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে এবং আকাশেই সেগুলো ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। রাশিয়া এসব হামলায় ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে কতগুলো ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়।