মেহেদী হাসান, শরীয়তপুর ॥
শরীয়তপুরে নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার বাজারে চাঁদা না পেয়ে মনির হোসেন চোকদার নামে এক হোটেল ব্যবসায়ীর দোকানঘর ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাজার পরিচালনা কমিটির অনির্বাচিত সভাপতি ফজলুল হক মালের সমথকরা। ফজলুল হক মাল নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ফজলুল হক মালের হুমুকে বাজার পরিচালনা কমিটির অন্য লোকজন মনির হোসেনের দোকানঘর ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। লুটপাট করেছে নগদ টাকা ও মালামাল।
এদিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নড়িয়া থানায় মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস মোল্লা। তিনি ঐ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে পেটে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। কুদ্দুস মোল্লা নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন মোল্লার আপন ভাই। এ বিষয়ে হাসানুজ্জামান খোকন বলেন, কুদ্দুস মোল্লা আমার ভাই। ওর এক ছেলে অসুস্থ, ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছে। ওর মনমানসিকতা ভালো নেই।
এদিকে ঘটনার পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন নড়িয়া উপজেলার বাহির কুশিয়া গ্রামের দিল মোহাম্মদ চোকদারের পুত্র ঘড়িসার বাজারের ওই হোটেল ব্যবসায়ী মনির হোসেন চোকদার ও তার পরিবার। থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার বা কোন তদন্তে আসে নাই।
ভুক্তভোগী মনির হোসেন জানান, একই উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের ৮৮ নং বারৈপাড়া মৌজার ১০৭৯ নং খতিয়ানের ৬০৯ ও ৬১০ নং দাগের ২.২ শতাংশ জমির ক্রয়সূত্রে মালিক তিনি এবং দীর্ঘদিন যাবত ওই সম্পত্তির কিছু অংশে দোকানঘর তুলে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এরপর বাকী সম্পত্তিতে ঘর তুলতে গেলে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করেন বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক মাল। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে ৩০ এপ্রিল বিকেলে ফজলুল হক মালের হুকুমে তার সমর্থক সবুজ, মজিবর মল্লিকের নেতৃত্বে বাজার কমিটির লোকজন তার দোকানঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
দোকানের টিন, খুঁটি, শাটার, কাঠসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে। এতে তার আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে এবং নগদ ২০ হাজার টাকা দোকান থেকে লুট করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক মাল বলেন, বাজারের লোকজন যে পথ দিয়ে টয়লেটে যাতায়াত করে সে পথ বন্ধ করে মনির দোকানঘর তুলেছে। তাই বাজার কমিটির লোকজন সেটা ভেঙ্গে দিয়েছে। আর এর দায়দায়িত্ব তার উপরও এসে যায় বলে তিনি স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে নড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।