পুরনো ঝামেলা নতুন করে খুঁচিয়ে সামনে নিয়ে এসেছে বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর। সোমবার (২ মে) রাতে লখনৌ সুপার কিংসের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর মধ্যকার লো স্কোরিং ম্যাচে নতুন করে জ্বলে উঠেছে বৈরিতার আগুন। মাঠেই কথা কাটাকাটি করেছেন ২০১১ বিশ্বকাপে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারতকে শিরোপা জেতানো বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর। এমনকি অল্পের জন্য বেঁধে যায়নি হাতাহাতি লড়াই।
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মাত্র ১২৬ রানের পুঁজি নিয়ে ১৮ রানের জয় পেয়েছে কোহলির দল। লখনৌয়ের মাঠে যখন একেকটা উইকেট পড়ছিল স্বাগতিক দলের, স্বভাবসুলভ আগ্রাসী উদযাপনে প্রতিপক্ষ শিবিরকে তাঁতিয়ে তুলছিলেন কোহলি। যার জের ধরে মাঠের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
ম্যাচের শেষে হাত মেলানোর সময় কোহলির ঝামেলা বেঁধে যায় লখনৌয়ের আফগান তারকা নাভিন উল হকের সঙ্গে। দুজনের কথাকাটাকাটির মধ্যেই সেখানে ছুটে আসেন স্বাগতিক দলটির মেন্টর গম্ভীর। এবার পুরনো সতীর্থের সঙ্গেই লেগে যায় কোহলির। অবস্থা এতটাই খারাপের দিকে যায় যে, তাদের সতীর্থরা মাঝখানে এসে আলাদা করেন তাদের, নতুবা হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেত এই বচসা।
এই ঘটনার জন্য দুজনেরই দায় দেখলেও অধিকাংশের চোখে বড় দায়টা কোহলিরই। ভারতের দুই সাবেক ক্রিকেটার অনিল কুম্বলে ও রবিন উথাপ্পা তুলাধোনা করেছেন সাবেক অধিনায়ক কোহলিকে। কুম্বলে মনে করেন, মাঠের ভেতরে যাই হোক না কেন, ম্যাচের পর হাত মেলাতে হবে। আর উথাপ্পা তো ভারতের সাবেক অধিনায়কের পরিপক্বতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বলেন, কোহলির বয়স তো আর ২১ না যে এমন আচরণ করবেন।
সোমবার (১ মে) ম্যাচের পর জিও সিনেমার অনুষ্ঠানে সাবেক কোচ কুম্বলে বলেন, ‘‘যে কোনও ম্যাচে আবেগের বিচ্ছুরণ হয়। কিন্তু এখানে সেইসব আবেগের বহিঃপ্রকাশ করতে চায় না খেলোয়াড়রা। মাঠের মধ্যে যাই হোক না কেন, বিপক্ষকে সম্মান জানাতে হবে। খেলাটাকে সম্মান জানতে হবে। মাঠে যাই হোক না কেন, ম্যাচের পর হাত মেলাতে হবে।’
একই অনুষ্ঠানে ভারতের হয়ে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা উথাপ্পা বলেন, ‘আমি বিরাট কোহলির অন্যতম বড় সমর্থক। কিন্তু ও যেভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে, সেটার একেবারেই সমর্থক নই আমি। ওর বয়স এখন আর ২১ নয়। যে কিনা ওরকম আগ্রাসী সেলিব্রেশন করবে। বিরাট এখন পরিণত ক্রিকেটার। তাকে দেখে কোটি-কোটি তরুণ ক্রিকেটার অনুপ্রাণিত হয়, উদ্বুদ্ধ হয়। বিরাটের এরকম আগ্রাসী আচরণে যে ওই তরুণদের কাছে ভালো বার্তা যাবে না।’
ভারতের জাতীয় দলে কোহলি যখন অধিনায়ক ছিলেন তখন কোচ ছিলেন কুম্বলে। সে সময় এই লেগ স্পিন কিংবদন্তির সঙ্গেও ঝামেলায় জড়ান কোহলি। যার জের ধরে জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে সর এ যেতে হয় কুম্বলেকে। আর ২০০৭ সালে ভারতের জার্সিতে বিশ্বকাপ জিতে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পেয়ে গেলেও জাতীয় দলে বেশিদিন টেকেননি উথাপ্পা। কিন্তু কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিতে নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। সেখানে দীর্ঘদিন খেলেছেন গম্ভীরের সতীর্থ হিসেবে।