তুরস্কে সাধারণ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, জনমত জরিপে অবস্থান ততই শক্ত হচ্ছে বিরোধী প্রার্থী কামাল কিলিচদারোগলুর। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলা কামালকে ভাবা হচ্ছে আধুনিক তুরস্কের জনক কামাল আতাতুর্কের প্রতিনিধি হিসেবে। আর তাইতো প্রশ্ন ওঠেছে, এবারই কি তাহলে থামছে টানা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ানের জয়রথ?
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্মরণকালের শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানির পাশাপাশি নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে দেশটি। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এমনিতেই বিপর্যস্ত ছিল দেশটির অর্থনীতি; এর মধ্যে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দেয় প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ। সেই ক্ষয়ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি এরদোয়ান প্রশাসন।
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই আগামী ১৪ মে দেশটিতে হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। জয়-পরাজয়ের নানা হিসেব কষছে রাজনৈতিক দলগুলো। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও একে পার্টির নেতা এরদোয়ানের বিরুদ্ধে তিনজন প্রার্থী থাকলেও, আলোচনার কেন্দ্রে দেশটির বিরোধী দল সিএইচপি’র নেতা কামাল কিলিচদারোগলু। অর্থনৈতিক সংকটে জনগণের অসন্তোষকে পুঁজি করে বাজিমাত করতে চান তিনি।
এর আগে, পরপর চার নির্বাচনে অনেকটা একতরফা জয় পেলেও এরদোয়ানকে ঠেকাতে এবার সম্মিলিত প্রার্থী দিয়েছে ছয়টি বিরোধী দল। বেছে নেয়া হয়েছে কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র নেতা কামাল কিলিচদারোগলুকে।
সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তুরস্কের অর্থনীতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশবাসীকে জেগে উঠতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব আমরা। দেশে প্রাচুর্য এবং শান্তি ফিরিয়ে আনব। এ মুহূর্তে আমাদের পরিবর্তন দরকার। আশা করি, তা এ নির্বাচনেই আসবে।’
এদিকে প্রচারে বিরোধীরা যখন সরব, তখন একেপি সমর্থকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে এরদোয়ানের অসুস্থতা। গত সপ্তাহে এক টিভি অনুষ্ঠানে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার পর টানা তিনদিন নির্বাচনী প্রচারণায় অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। ভোটের আগমুহূর্তে ৬৯ বছর বয়সী নেতার অসুস্থতা কী প্রভাব ফেলবে ভোটারদের মনে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন সমর্থকরা।
গত দুই দশক তুরস্কের রক্ষণশীল মুসলিমদের একচ্ছত্র সমর্থন পেয়ে এসেছেন এরদোয়ান। বিশ্ব রাজনীতিতে দেশকেও নিয়ে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ এক অবস্থানে। এতে পার্টি বলছে, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের এ সংকটময় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এমন শক্ত নেতৃত্বেরই প্রয়োজন তুরস্কের।